ভারত শেখ হাসিনার পতন মানতে না পেরে ষড়যন্ত্র করছে: রিজভী

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:০১

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা হচ্ছে অথচ ভারত শেখ হাসিনার পতন মানতে না পেরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় জুলাই আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত কোনওভাবেই স্থির হতে পারছে না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা (ভারত) ক্রমাগতভাবে অপপ্রচার, মিথ্যাচার, অপতথ্য প্রচার করে যাচ্ছে, পৃথিবীর অন্য কোনও দেশ এটা করছে না। তারা শেখ হাসিনার জন্য অত্যন্ত অস্থির হয়ে গেছে।

এসময় রিজভী বলেন, হাসিনা নাকি বিক্রি হয় না অথচ তিনি ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। একইসাথে দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশের বাইরে অর্থ পাচার করেছে। একটি দেশকে লুটপাট করে, হত্যা-গুম করে বিনাভোটে ক্ষমতায় বসে ছিলো।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “এদেশের তরুণ ছাত্র-জনতার এই আত্মদানের ঢেউ যেন গোটা বিশ্বজনতাকে এক ধরনের চমক দিয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ অপতথ্য দিয়ে যাচ্ছে- বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। কোথায় অত্যাচার হচ্ছে? অত্যাচার তো করছেন আপনারা। দিল্লিতে জুমার নামাজ আদায়ের সময় পুলিশ দিয়ে মুসল্লিদের আঘাত করা হয়েছে। তাদেরকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।”

সংখ্যালঘু নিপীড়ন হয় ভারতে- এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “৪০০ বছরে সম্রাট বাবর যে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন সেই মসজিদকে ভেঙে-চুড়ে তারা সেখানে মন্দির নির্মাণ করেছে। সংখ্যালঘুদের উপর যত অত্যাচার-অবিচার-অনাচার ওটা তো হয় ভারতেই, বাংলাদেশে হয় না। বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান একে অন্যের হাত ধরে ঘোরাফেরা করে। আমরা তো সবাই মিলে একই হাটে যাই, একই হাটে বাজার করি; এই ঐতিহ্য আমাদের পুরনো। অথচ আমাদের সেই মহান ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করার জন্য ভারত থেকে বারবার আমাদের বিরুদ্ধে অপতথ্য দেওয়া হচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপন করা হচ্ছে। যখন তারা দেখল এটা করেও লাভ হচ্ছে না, এখন তারা কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়া যে আপনারা দিচ্ছেন বাংলাদেশের বিজিবির সাথে কি আলোচনা করেছেন? কোথায় কীভাবে দিবেন? আপনারা যা দেখেন, যা করেন- সেটা করেন আধিপত্যবাদী চিন্তা-চেতনা থেকে। আপনারা বড় দেশ, অনেক লোক সংখ্যা এই অহংকার নিয়ে আপনারা কাজ করেন।”

ভারতের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, “আপনারা দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপলে বাংলাদেশের মানুষের দেশপ্রেম, বাংলাদেশের মানুষের জাতীয়তাবাদী চেতনা, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার অঙ্গীকার অনেক বেশি শক্তিশালী। ভারতে আপনাদের কত অস্ত্র আছে, সেনাবাহিনী কত বড়, ওইটা দিয়ে আপনারা মাপলে পারবেন না। আপনারা এত অস্থির কেন? আপনারা বাংলাদেশের বিষয়ে কেন যেন এলোমেলো কথা বলছেন। কারণ আপনারা কোনওভাবেই শেখ হাসিনার পতন কামনা করেননি। আপনাদের স্বার্থ শেখ হাসিনা দেখত বাংলাদেশের স্বার্থ সে দেখত না। কারণ শেখ হাসিনা জানত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে তিনি কোনদিনও জিততে পারবেন না। সেই কারণে শেখ হাসিনা সব সময় দিল্লির একটা আশ্রয় চেয়েছে। তিনি শেখ হাসিনা নিজেই তো বলেছিলেন ভারতকে আমি যা দিয়েছি ভারত সারাজীবন মনে রাখবে। এই কারণেই আজকে ভারতের নীতি নির্ধারকরা কিছু রাজনৈতিক দল অত্যন্ত অস্থির হয়ে গেছে শেখ হাসিনার জন্য।

শেখ হাসিনা সমস্ত আইনকে পদদলিত দেশের সব গনতান্ত্রিক স্তম্ভ গুলো ধ্বংস করে দিয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, এবার দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে কাজ করতে হবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার যেসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে সেগুলো পুনর্গঠন করতে হবে। এসময়, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিও জানান তিনি।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইয়ুম, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হক সুমন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দীন বকুল প্রমুখ।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top