পুলিশ বাহিনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ

৩৬০০ কনস্টেবল নেবে বাংলাদেশ পুলিশ

রাশেদ রাসেল | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৭:১২

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। দেশের ৬৪ জেলা থেকে এবার ৩ হাজার ৬০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬০ জন পুরুষ ও ৫৪০ জন নারী নিয়োগ পাবেন। অনলাইনে আবেদন চলছে। আগামী বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে।

আবেদনের যোগ্যতাঃ

আগ্রহী প্রার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ন্যূনতম জিপিএ-২ দশমিক ৫ থাকতে হবে। আবেদনের জন্য বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ও অবিবাহিত হতে হবে। তালাকপ্রাপ্ত গ্রহণযোগ্য নয়। ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে প্রার্থীর বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য কোটার জন্য বিদ্যমান কোটা অনুসৃত হবে।

শারীরিক যোগ্যতাঃ

সাধারণ ও অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা (বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি ছাড়া) কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। নারী প্রার্থীর উচ্চতা সাধারণ ও অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি।

পুরুষ প্রার্থীর বুকের মাপ সাধারণ ও অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি। বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি।

যেভাবে আবেদনঃ

আগ্রহী প্রার্থীদের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে আবেদন ফরম পূরণের সহায়ক হিসেবে ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং ফরম পূরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিয়োগসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এ লিংকে জানা যাবে।

আবেদন ফিঃ

আবেদন ফরম পূরণ করার পর যোগ্য প্রার্থী একটি ইউজার আইডি পাবেন। ওই ইউজার আইডিতে আবেদন ফরম পূরণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে ৪০ টাকা জমা করতে হবে।

যে সাত ধাপে প্রার্থী নির্বাচনঃ

১. প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং: অনলাইনে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে নির্ধারিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপের জন্য বাছাই করা হবে। বাছাইকৃত প্রার্থীদের মুঠোফোন নম্বরে পরবর্তী ধাপে অংশগ্রহণের জন্য ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেটি ব্যবহার করে পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

২. শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা: প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং ধাপে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখ, সময় ও স্থানে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার জন্য উপস্থিত হতে হবে।

৩. লিখিত পরীক্ষা: শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞানের ওপর মোট ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো টেলিটক প্রিপেইড নম্বর থেকে লিখিত পরীক্ষার ফি বাবদ ১২০ টাকা জমা দিয়ে লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

৪. মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখে ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

৫. প্রাথমিক নির্বাচন: প্রতি জেলায় নিয়োগযোগ্য প্রকৃত শূন্য পদ ও বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি অনুসরণ করে লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হবে।

৬. স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন: প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। শারীরিক পরীক্ষাসংক্রান্ত তথ্যাদিসহ প্যাথলজিক্যাল ইনভেস্টিগেশনে অংশগ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ করতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন সন্তোষজনক হলে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হবে। তবে ভেরিফিকেশনে তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দিলে প্রার্থী অযোগ্য বিবেচিত হবেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় একবার অযোগ্য হলে পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

৭. চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্তকরণ: প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগদানের পর তাদের শারীরিক যোগ্যতাসহ অন্যান্য তথ্য আবার যাচাই করবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত পুনর্বাছাই কমিটি। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। নির্ধারিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল হিসেবে ছয় মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হবে।

প্রশিক্ষণকালীন সুযোগ-সুবিধাঃ

ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) হিসেবে প্রশিক্ষণকালীন বিনামূল্যে পোশাক, থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসাসুবিধা রয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষণকালীন সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রতি মাসে প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হবে।

নিয়োগ ও চাকরির সুযোগ-সুবিধাঃ

সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষে ১৭তম গ্রেডে (৯,০০০-২১,৮০০) বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে থাকতে হবে। শিক্ষানবিশ ঘোষণার তারিখ থেকে দুই বছর সন্তোষজনক চাকরি পূর্ণ হলে কনস্টেবল পদে স্থায়ী করা হবে। নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীদের শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত অবিবাহিত থাকতে হবে। নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীরা বিনামূল্যে পোশাকসামগ্রী, ঝুঁকি ভাতা, চিকিৎসাসুবিধা এবং নিজ ও পরিবারের নির্ধারিত সংখ্যক সদস্যদের জন্য প্রাপ্যতা অনুযায়ী পারিবারিক রেশনসামগ্রী স্বল্প মূল্যে প্রাপ্য হবেন। পুলিশ বাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী উচ্চতর পদে পদোন্নতিসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

আবেদনের শেষ সময়: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top