হলুদ সাংবাদিকতা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়

সংবাদের সোর্স প্রকাশ করতে বাধ্য নয় সাংবাদিকরা: হাইকোর্ট

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২২, ০৬:০০

হাইকোর্ট

হাইকোর্ট বলেছেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির দুর্নীতির বিরুদ্ধে গুরুত্ব সহকারে সংবাদ প্রকাশ করে সাংবাদিকরা। এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতে গিয়ে হলুদ সাংবাদিকতা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। এটাকে সবসময় নিরুৎসাহিত করতে হবে।

রায়ে বলা হয়েছে, দুর্নীতি এখন একটি বৈশ্বিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অনিয়ম, অর্থপাচারসহ নানা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনস্বার্থে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাংবাদিকরা। দুর্নীতির মত গুরুতর বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে গিয়ে নানা তথ্য সূত্র ব্যবহার করে থাকেন তারা। এই তথ্য সূত্র কে বা কারা সেটা প্রকাশ করতে সাংবাদিকরা বাধ্য নয়। আইন তাদেরকে এ সুরক্ষা দিয়েছে।

‘২০ কোটিতে প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে এমন দাবি করে রিপোর্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। এরপর হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করে। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ রায় দেয়।

রায়ে আশরাফুলের বিরুদ্ধে  দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে পুনরায় অনুসন্ধানে দুদককে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রায় প্রাপ্তির ৬ মাসের মধ্যে এই অনুসন্ধান শেষ করতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্ট বলেন, এটি আদালত অবমাননার মামলা নয়। আর সাংবাদিকের কোনো সংবাদের বিষয়ে অভিযোগ থাকলে আগে প্রেস কাউন্সিলের শরণাপন্ন হতে পারেন। সাংবাদিকের সংবাদের সোর্স আমরা জানতে চাইনি।

আদালত বলেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে দেয়া আছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, এটা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য উল্লেখ করে আদালত বলেন, আধুনিক বিশ্বে জানার অধিকার সবারই আছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো জনগণকে সজাগ করা। বর্তমান সময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ছে। আর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আদালত তার রায়ে বলেন, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে গণমাধ্যমের মনোযোগী হওয়া উচিৎ। জনস্বার্থে সাংবাদিকেরা দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে আইন তাদের সুরক্ষা দিয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top