সীমান্ত হত্যা রোধে বিজিবি-বিএসএফ যৌথ টহল
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০১:৫৪
সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে থাকা স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স’র (বিএসএফ) যৌথ টহল কার্যকর করতে এক মত প্রকাশ করেছেন দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর প্রধানরা।
এছাড়াও দু’দেশের ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচিসহ প্রয়োজনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়ার বিষয়েও উপনীত হন তারা।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ের অনুষ্ঠিত ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনে সীমান্ত রক্ষায় এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত রক্ষাবাহিনী বিজিবি-বিএসএফ’র মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ে এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে বিজিবি’র মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে অংশ নেন। এদিকে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র মহাপরিচালক শ্রী রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন সম্মেলনে।
সম্মেলনে বিজিবির মহাপরিচালক সীমান্তে বিএসএফ, ভারতীয় নাগরিক, দুর্বৃত্তদের মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত, মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সর্বদা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্কের প্রশংসা করে। তারা প্রত্যাশা করে বিজিবি এবং বিএসএফ সীমান্ত হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং অপরাধীদের হত্যার না কে হস্তান্তরের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
সীমান্তে হত্যার ঘটনা কমিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছেন বিএসএফ মহাপরিচালক। সীমান্তে মানবাধিকার রক্ষা ও সহিংসতা রোধে যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে উভয় পক্ষই সীমান্তে জনসচেতনতা কর্মসূচি জোরদারকরণ, দুর্গম অঞ্চলে যথাযথ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সমন্বিত টহল বৃদ্ধি করে সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একমত হন।
বিজিবি মহাপরিচালক সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (সিবিএমপি) ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরনের আন্তসীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদি পশু, জালমূদ্রা, স্বর্ণ প্রভৃতি চোরাচালানের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এসব অপরাধ দমনের জন্য বিএসএফ’র সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, অবৈধ মাদক পাচারের ফলে দু’দেশের যুব সমাজের মধ্যে মাদকাসক্তি মারাত্মকভাবে বেড়েছে যা উভয়ের জন্যই বিপদজনক। এটাকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা দরকার। এ ব্যাপারে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে। চোরাকারবারীদের সম্পর্কিত এমন তাৎক্ষণিক ও দরকারি তথ্য পরস্পরের মধ্যে আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে উভয়পক্ষ সম্মত হন।
সম্মেলনে বিজিবি ও বিএসএফ উভয় মহাপরিচালক সম্মেলনের অর্জন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। উভয়েই সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। উভয় পক্ষ মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন আগামী এপ্রিল ২০২১-এর দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের ঢাকায় অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।
এনএফ৭১/আরআর/২০২০
বিষয়: বিজিবি বিএসএফ যৌথ টহল সীমান্ত হত্যা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।