জি-২০ সম্মেলনে শেখ হাসিনা
বিশ্বনেতাদের সামনে কী তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী? নেতৃত্বে কী নতুন মুখ আসছে...
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:১২
ভারতের নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে এ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। দিল্লিতে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সম্মেলনের জন্য বিশেষভাবে সাজানো কনভেনশন সেন্টার ‘ভারত মণ্ডপমভার’-এ উপস্থিত হন বিশ্বনেতারা। নয়াদিল্লিতে এই অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বিশ্ব নেতারা হলেন- মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল,তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোয়ান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।
প্রথম পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হলো ‘ওয়ান আর্থ’। দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হবে ‘ওয়ান ফ্যামিলি’। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সম্মেলনের শেষ দিন নরেন্দ্র মোদি ‘এক ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেশনে সভাপতিত্ব করবেন।
শুক্রবার জি-২০ সম্মেলন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের জি-২০-এর মুখ্য সমন্বয়ক ও সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, গত ১ ডিসেম্বর ভারত জি-২০-এর সভাপতির দায়িত্ব নেয়। এরপর ভারতজুড়ে ৬০টিরও বেশি শহরে ২০০-এরও বেশি বৈঠক হয়েছে। সম্মেলন ও বৈঠকগুলোকে ঘিরে ভারত তার গণতন্ত্র, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। এ সময় বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিভিন্ন আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতা অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের কাছে তুলে ধরবেন তিনি।
দুপুরে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
ভারতে অনুষ্ঠেয় এবারের জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হচ্ছে– নেদারল্যান্ডস, স্পেন, নাইজেরিয়া, মিশর, মরিশাস, সিঙ্গাপুর, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
জি-২০ ১৯টি দেশ (আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। জি-২০ সদস্যরা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ, বিশ্ববাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের বেশি এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিনিধিত্ব করে।
আগামীকাল রোববার জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় এবং শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশের নেতার সঙ্গে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সম্মেলনের শেষ দিনে ‘জি২০ নয়াদিল্লি নেতাদের ঘোষণা’ গৃহীত হবে।
জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় মোদির সরকারি বাসভবনে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। কালই প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে আসিয়ান সম্মেলনে যোগদানের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়া সফরের পর দ্বিতীয় হাই প্রোফাইল আন্তর্জাতিক ইভেন্টে সায়মা ওয়াজেদের উপস্থিতিকে বৃহত্তর রাজনৈতিক ভূমিকার উপসর্গ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগে বৃহত্তর রাজনৈতিক ভূমিকায় আসতে পারেন তিনি।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।