ইসরায়েলি বর্বরতার ১০০ দিনে নিহত ২৪ হাজার ফিলিস্তিনি

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী ২০২৪, ১৯:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বর্বরতার ১০০ দিন পার হলো। শততম দিন ছিলো রোববার। এই সময়ের মধ্যে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রায় ২৪ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। সম্প্রতি অক্সফাম দাবি করেছে, গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ২১ শতকের অন্য যে কোনো বড় সংঘাতকে ছাড়িয়ে গেছে।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪ হাজার ১০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৬০ হাজার ৮৩৪ জন। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘন্টায় ইসরাইল ১৩২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ২৫২ জনকে আহত করেছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পরই গাজায় পালটা আক্রমণ চালায় ইসরাইলি বাহিনী।

গাজায় নৃশংস হত্যকাণ্ড বন্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ও মানবে না ইসরাইল। গাজা হামলার শততম দিনের ঠিক আগের সন্ধ্যাতে সে ইঙ্গিতই দেন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ‘কুসন্তান’ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

গাজার রাফাহ এলাকায় কুয়েতি হাসপাতালের চিকিৎসক সুহাইব আল-হামস বলেন, ‘এই ১০০ দিন কীভাবে কেটে গেল? গাজাবাসী এই সময়গুলো তিক্ততার সঙ্গে, শহীদদের সঙ্গে, আহতদের নিয়ে সময় পার করেছে। তারা বেদনা, নিষ্ঠুরতা ও দুঃখের দৃশ্য নিয়ে পার করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু বাড়িঘরই নয়, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলেরও ধ্বংস দেখেছি। ইসরাইল বোমা হামলা করেছে হাসপাতাল, রাস্তা, চিকিৎসক দল বা অ্যাম্বুলেন্স সবকিছুর ওপর। তারা কোনো কিছুই বাদ দেয়নি।’

আগামী দিনগুলোতে গাজা ধ্বংসে নতুন কর্মসূচির ঘোষণায় বললেন, পুরোপুরি বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরাইল। বিশ্ব আদালত বা অন্য কোনো শক্তি ইসরাইলকে থামাতে পারবে না। শনিবার এক টেলিভিশনে ভাষণে এ ‘চরম বক্তব্য’ দেন নেতানিয়াহু।

শনিবার যুদ্ধের ৯৯তম দিনে ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন ওয়াশিংটনে বিক্ষোভকারীদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একটা বড় অংশই ছিলেন তরুণ। বিক্ষোভ চলাকালীন তাদের অনেকেই ঐতিহ্যবাহী কেফিয়াহ পড়েছিলেন।

‘এখনই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করুন’ স্লোগান দিচ্ছিলেন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষেরা। তাদের হাতে থাকা ব্যানার-ফেস্টুনে লেখা ছিল, ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করুন, গাজায় যুদ্ধের অবসান করুন।’

ইসরাইলকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। একইদিনে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে লন্ডনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।লন্ডনের বিক্ষোভে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শনিবার সেখানে প্রায় ১ হাজার ৭০০ পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছিল।

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top