• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


২৮ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ হওয়া কে এই আজিজ?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১২:২১

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। তবে সময়ের আলোচিত নাম আজিজুল ইসলাম খন্দকার আজিজ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ হওয়ার রেকর্ড গড়লেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের শুরুর দিনে সিএনজিতে করে সংসদে আসেন আজিজুল।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ২৯৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে বয়সে সবার ছোট আজিজ। সার্টিফিকেট অনুযায়ী খন্দকার আজিজের বয়স মাত্র ২৮ বছর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসন থেকে ৯ হাজার ৫৭৫ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।

আজিজুল ইসলাম খন্দকার আজিজের প্রতিপক্ষও ছিলেন দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। একজন নৌকা প্রতীকের, অন্যজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নৌকার প্রার্থী ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার। স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও দুবারের উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন।

বয়সে ছোট হওয়াসহ নানা কারণে ঈগল প্রতীকের আজিজুল শুরুতে সেভাবে আলোচনায় ছিলেন না। কিন্তু তিনি গণমানুষের নেতা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন। আগে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য।

রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আজিজুল ইসলাম খন্দকার আজিজের প্রতীক ছিল ঈগল। তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন চাকলাদারের ভোট ৩৯ হাজার ২৬৯টি। এইচএম আমির হোসেন পেয়েছেন ১৭ হাজার ২০৯ ভোট।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল ইসলাম মাত্র ২৭ বছর বয়সে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২৮ বছর ৮ মাস ২৩ দিন বয়সে হলেন সংসদ সদস্য। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল। তার বাড়ি কেশবপুর পৌরসভার ব্রহ্মকাটি গ্রামে। পিতা খন্দকার রফিকুজ্জামান ও মাতা ফরিদা বেগমের ৯ সন্তান। চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে এমপি আজিজ সবার ছোট।

আজিজ বলেন, আমার স্বপ্ন আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করা এবং নিজেকে মানব সেবায় নিয়োজিত রাখা। খন্দকার আজিজের লেখাপড়ার হাতেখড়ি ব্রহ্মকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারপর কিছুদিন তিনি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন। বুড়ীহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি ও কেশবপুর ডিগ্রি কলেজে থেকে ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরে পাঁজিয়া কলেজ থেকে ২০১৫ সালে ডিগ্রি শেষ করেন তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি মারা যান। ১৪ জুলাই উপনির্বাচনে শাহীন চাকলাদার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন।

অনেকের ধারণা ছিল, স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচ এম আমির হোসেনের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তার। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, হেভিওয়েট প্রার্থী শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে খন্দকার আজিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।

এত কম বয়সে এমপি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্থানীয়রা বলেন, আমরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক সাহেবের মৃত্যুর পর ভালো নেতা পাইনি। শাহীন চাকলাদার মূলত বহিরাগত। তার বাড়ি বরিশাল। তিনি যশোরের থাকেন। এলাকার মানুষ তার নির্যাতনে মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

তারই প্রতিবাদে মানুষ একজোট হয়ে নৌকা ঠেকাও প্রচারণা চালায়। আজিজকে ভোট দিয়েছে দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণির জনগণ। যারা ভোট দেয়নি তারাও তার সমর্থন করেছেন। এ ছাড়া আজিজ সবার মন জয় করে নিয়েছেন। ছোট থেকেই এলাকার মানুষের বিপদে আপদে পাশে থাকতেন খন্দকার আজিজ। তিনি বড় নেতা হতে পারবেন যদি মানুষের পাশে থাকেন।

কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার রুহুল আমিন বলেন, মূল কারণ হলো বিএনপি-জামায়াত। তাদের ভোটেই সে পাস করেছে। আজিজও আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি কি আওয়ামী লীগের ভোট পাননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ পেয়েছে। কিছু তো পাবেই। তা ছাড়া সেও আমার স্নেহধন্য।

সর্বকনিষ্ঠ এমপি হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজেকে ধন্য মনে করছি। এটা খুবই আনন্দের। জয়ের ব্যাপারে আমার শতভাগ বিশ্বাস ছিল। তবে ফলাফল ঘোষণার পরে বুঝতে পারছি মানুষ আমাকে কত বড় সম্মান দিলেন।

আমি সারাজীবন কেশবপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। তাদের পাশে থাকতে চাই। বিশেষ করে কৃষক, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে ভেটে খাওয়া মানুষের কাছে আমি ঋণী। তাদের প্রতি সীমাহীন কৃতজ্ঞ। আমি যত বড়ই হই না কেন তাদের যেন ভুলে না যাই সে জন্য দোয়া করবেন।

বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহম্মেদ পলক মাত্র ২৯ বছর বয়সে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশে সবার দৃষ্টি কেড়েছিলেন।

এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিলের ছেলে নিজাম উদ্দিন জলিল জন ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য। ওই সময় তার বয়স ছিল ২৭ বছর।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top