বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের নিরাপদ রুট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

মনির হোসেন জীবন | প্রকাশিত: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৬:২৯

ফাইল ফটো

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেশে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে । কঠোর নজরদারি ও তদারকি করেও এটি কোন ভাবেই যেন থামছে না। এখাত থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পাচার হচেছ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর পাচারকারীদের নিরাপদ রুট হলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ৩০৫টি বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপের চালান আটক করা হয়েছে। কচ্ছপগুলো লাগেজ ব্যাগে চীন থেকে ঢাকায় আনে পাচারকারী। স্ক্যান মেশিনে ধরা পড়ায় আটক হন তিনি। বন বিভাগ বলছে, সৌখিন পাখি ও অ্যাক্যুরিয়াম মাছ আমদানির অনুমোদন নিয়ে পাচারকারীরা বিমানবন্দরকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে।

লাগেজ ব্যাগের আড়ালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমেরিকান স্ন্যাপিং কচ্ছপ বহন করছিলেন আশুলিয়ার ব্যবসায়ী আবুল কাসেম। তিনি চীন থেকে এনেছেন এগুলো। তবে বিমানবন্দরের স্ক্যান মেশিনে ধরা পড়ে ৩০৫টি কচ্ছপ। এর মধ্যে ২০টি স্ন্যাপিং কচ্ছপ, আর বাকিগুলো লালমুখো কচ্ছপ।

অভিযুক্ত আবুল কাসেম নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে বলেন, তিনি একজন এক্সেসরিজ ব্যবসায়ী। কচ্ছপ পাচারের সঙ্গে জড়িত নন। কিছু দিন আগে শাহজালাল বিমানবন্দরে আটক হয় মিঠা পানির স্ন্যাপিং কচ্ছপের চালান। এই প্রজাতির কচ্ছপের আদি নিবাস আমেরিকায়। সাইটিসের তালিকাভুক্ত হওয়ায় এগুলোর আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধ। তবে সৌখিন পাখি ও অ্যাক্যুরিয়াম মাছের আড়ালে কচ্ছপ, ম্যাকাও, বিদেশি পাখিসহ নানা প্রাণী পাচার করে ব্যবসায়ীরা।
ইদানিং ৩০৫টি বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপের চালান আটক হয়েছে।

অপরদিকে বন্যপ্রাণী অরপাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে জানান, জব্দ করা কচ্ছপগুলো বাংলাদেশ থেকে যে কোনো দেশ যেমন ভারত, মিয়ানমার বা অন্য যে কোনো দেশে পাচার হতে পারে। তবে এগুলো বহনের জন্য আমাদের বন বিভাগের কাছ থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) নেওয়া হয়নি।


কয়েক বছর ধরে শাহজালাল বিমানবন্দর বন্যপ্রাণী পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখানে বনবিভাগের তদারকির অভাবে পাচারের সুযোগ বাড়ছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রাফিক বলছে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বন্যপ্রাণী পাচার হয়।

বন্যপ্রাণী অরপাধ দমন ইউনিটের পরিচালক সানাউল্লাহ পাটোয়ারি সাংবাদিকদের বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য অধিদপ্তর বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে পাচার বন্ধে নজরদারির জন্য চিঠি দিয়েছে। তবে এখনও সেভাবে রেসপন্স পাওয়া যায়নি।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top