চেয়ারম্যান-মেয়র হতে লাগবে স্নাতক ডিগ্রি

মেয়র (পৌরসভা-সিটি করপোরেশন) ও চেয়ারম্যান (ইউনিয়ন-উপজেলা-জেলা পরিষদ) পদে নিরক্ষর বা স্বল্পশিক্ষিতরা নির্বাচন করতে পারবেন না। এসব পদে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে গ্র্যাজুয়েট (স্নাতক) বা সমমান। এসব পদে সরাসরি ভোট হবে না।

এ ছাড়া থাকবে না সরাসরি ভোটের বিধানও। তবে সরাসরি ভোটের বিধান বলবৎ থাকবে ইউপি সদস্য (মেম্বার) নির্বাচনে। সরকারি চাকরিজীবীরা কাউন্সিলর-সদস্য হতে পারবেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) মাঠ পর্যায়ে মতামত নেওয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে এমন সিন্ধান্তে উপনিত হয়েছে কমিশন। এখন চলছে সংকলন কার্যক্রম। এর পর আরেক দফা যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, সাধারণ মানুষের অভিযোগ—দল-পেশীশক্তি ও টাকার দাপটের কারণে শিক্ষিত মানুষ জনপ্রতিনিধি হতে পারেন না। নিরক্ষর লোক যেন জনপ্রতিনিধি হতে না পারেন, শিক্ষিতরা জনপ্রতিনিধি হতে আগ্রহী হন এবং বিজয়ী হয়ে আসতে পারেন, এমনভাবে সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হবে।

ইউপি সদস্যরা ভোট দিয়ে যাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন, তাকে কমপক্ষে স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। ইউপি সদস্যদের মধ্যে একজনকে সভাধ্যক্ষ নির্বাচিত করা হবে। সভাধ্যক্ষকেও স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। এভাবেই সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভায় নির্বাচন হবে।

জানা গেছে, চেয়ারম্যান ও মেয়রদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাদের বেতন কাঠামোতেও সংস্কারের প্রস্তাব আনা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের বেতন উপজেলা পর্যায়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার সমান এবং পৌর মেয়রের বেতন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমান হবে। স্থানীয় সরকারে উপদেষ্টা বা কোনো পদে থাকতে পারবেন না সংসদ সদস্যরা (এমপি)। সভায় উপস্থিত হয়ে শুধু মতামত দিতে পারবেন।

কমিশন ৫০ হাজারের চেয়ে কম জনসংখ্যার পৌরসভাকে বাতিলের সুপারিশ করবে। এসব পৌরসভার বেশির ভাগ অতীতে দলীয় নেতাদের পুনর্বাসনের জন্য করা হয়েছে। এ ধরনের পৌরসভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসের পর মাস বেতন বকেয়া থাকে। এ ধরনের প্রায় শ’খানেক পৌরসভাকে ইউনিয়নের সঙ্গে একীভূত করার সুপারিশ করবে কমিশন।

কমিশনপ্রধান ড. তোফায়েল জানান, ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকারে ভোট করতে নির্বাচন কমিশনের ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। একসঙ্গে এসব নির্বাচন করলে খরচ হতো ৬০০ কোটি টাকা। এ জন্য প্রস্তাবে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন একসঙ্গে করার সুপারিশ থাকবে। দলীয় প্রতীকে হবে না আর কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন।