ডিসি সম্মেলন শুরু আজ, উঠছে ৩৫৪ প্রস্তাব
বার্তা বিভাগ | প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৬

তিনদিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি)। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।
তিনি জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হবে একটি ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে। যেখানে এই আন্দোলনটা কীভাবে হয়েছিল, কীভাবে আন্দোলনের ফল লাভ হলো সেই বিবরণ সেখানে থাকবে। সুতরাং আপনারা বুঝতে পারছেন আমরা গুরুত্ব দিয়ে এটা করছি। এছাড়া বিপ্লবোত্তর আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টিও আমরা শুরুতেই তুলবো। সেখানে এটি প্রাধান্য পাবে বলে আমরা আশা করছি।
আগামী সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং তার উপদেশ ও নির্দেশনা গ্রহণের সূচি নির্ধারিত রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ভবনে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও জানান, ডিসিদের পাঠানো ১ হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের মধ্যে ৩৫৪টি প্রস্তাব কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ডিসি সম্মেলনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা সরকারের নীতি-নির্ধারণী বিষয়, উন্নয়ন কর্মসূচি ও অন্যান্য প্রাধিকার সম্পর্কে নির্দেশনা গ্রহণ এবং কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে পাঠানো মাঠ পর্যায়ে জনস্বার্থ সম্পৃক্ত প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের সম্মেলন ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত সম্মেলন চারদিনব্যাপী ছিল। সম্মেলন চলাকালে কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, সদয় নির্দেশনা গ্রহণ ও মতবিনিময় করবেন। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের সঙ্গে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে কার্য-অধিবেশন রয়েছে।
সচিবালয়ের পাশে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অধিবেশনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট অধিবেশন ৩৪টি, কার্য-অধিবেশন ৩০টি। এরমধ্যে একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, একটি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা দুটি (প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা ও বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা)।
অংশগ্রহণকারী কার্যালয় একটি (প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়); অংশগ্রহণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থার সংখ্যা ৫৬টি। অংশগ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের উপদেষ্টা/বিশেষ সহকারী/সিনিয়র সচিব/সচিবরা।
কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে পাওয়া ১ হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের মধ্যে ৩৫৪টি প্রস্তাব কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
পাওয়া প্রস্তাবসমূহে জনসেবা বাড়ানো, স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানো, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইনকানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ২৮টি প্রস্তাব এসেছে।
ডিসিশন সম্মেলনের প্রধান প্রধান আলোচ্য বিষয় এবার ডিসি সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম জোরদারকরণ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।
সম্মেলনের প্রত্যাশিত ফলাফল
মাঠ পর্যায়ে কর্মসম্পাদনকালে জেলা প্রশাসকরা যে সব আইনগত, প্রশাসনিক, আর্থিক কিংবা অন্যবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন এবং স্ব স্ব জেলায় যেসব সম্ভাবনা বিদ্যমান সেসব বিষয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে সরাসরি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের উপদেষ্টা/বিশেষ সহকারী/সিনিয়র সচিব/সচিবদের উপস্থিতিতে আলোচনা করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পন্থা নির্ধারণ এবং বিদ্যমান সম্ভাবনাসমূহকে কাজে লাগানোর উপায় নির্ধারণ।
মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের অনুসৃত নীতি-কৌশল ও গৃহীত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জেলা প্রশাসকরা কর্তৃক সম্যক ধারণা লাভ; পর্যটন বিকাশ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিষেবা বাড়ানো এবং পন্থায় সরকারের নীতি ও কর্মসূচির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিতকরণ এবং নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন।
শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, গত বছর ডিসি সম্মেলনের বাজেট ছিল ২ কোটি টাকার কিছু বেশি। এবার আমরা ১ কোটি ৭০ লাখ বা এর কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করবো। আমরা আশা করছি এর থেকে কিছু টাকা আমরা বাঁচাতেও পারবো।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।