বাংলাদেশ চাইলে তিস্তায় প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তুত চীন
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১:০৬

বাংলাদেশ সরকার চাইলে তিস্তা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জনিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সেদেশের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, বছর চারেক আগে তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা চেয়ে প্রস্তাব পাঠালে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আর কোনো প্রতিক্রিয়া জায়াননি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চীনা দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তিস্তা নদীর পাড়ে যে হাজার হাজার মানুষ থাকে তাদের মঙ্গলের জন্য এটি যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা উচিত। তবে, একটি সার্বভৌম দেশ হিসাবে এটি বাংলাদেশ নিজে করতে পারে অথবা চীনের সহায়তা নিয়ে করতে পারে। ২০২১ সালে তিস্তা প্রকল্পের সমীক্ষা যাচাইয়ে বাংলাদেশ সরকার সহায়তা চাইলে চীন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরে ২০২৩ সালে তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনও উত্তর তারা পায়নি বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এছাড়া এখন পর্যন্ত ৩০টি কোম্পানি চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্প জোনে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তারা ১০০ কোটি ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগে আগ্রহী। চীন আশা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত চীনা শিল্প পার্ক করার অনুমোদন দেবে। উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, অনুবাদ করার জন্য অনুবাদক তৈরি করা এবং চিকিৎসার অন্যান্য ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। সবকিছু ঠিকমতো চললে আগামী মার্চ থেকে বাংলাদেশ থেকে প্রথম রোগীর দল চীনে চিকিৎসা পাবে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক চায়। বাংলাদেশ এক চীন নীতি, বেল্ট অ্যান্ড রোডের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এই জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ চীন।
চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশিদের চিকিৎসার বিষয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, কুনমিংয়ে তিনটি হাসপাতাল বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আগ্রহীদের জন্য ভিসা সহজে দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রদূত জানান, দুই দেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিনিময়ে বাংলাদেশে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আর চীনে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ইয়াও ওয়েন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চীনের অবস্থান একই। চীন এই সমস্যার সমাধান চায়।
এক প্রশ্নের উত্তরে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে ও ওয়েবসাইটে চীন-অরুণাচল সীমান্তের ভুল মানচিত্র নিয়ে চীনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এটা জানিয়েছি। আমরা এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন চাই, আশা করি এ বিষয়ে চীনের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক চায়। বাংলাদেশ এক চীন নীতি, বেল্ট অ্যান্ড রোডের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ চীন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন গত ২১ থেকে ২৪ জানুয়ারি চীন সফর করেন। এ বিষয়ে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চীনা দূতাবাস।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।