বৃহঃস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের মেয়াদ হবে ৩ বছর, নীতিমালা কী বলছে?

রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:১৯

ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিকদের জন্য নতুন প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা জারি করেছে অন্তর্র্বতী সরকার। মোট সংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ১৫টির বেশি পাবে না কোনো প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া এ কার্ডের মেয়াদকাল হবে তিন বছর।

সাংবাদিকদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশনবুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ‘প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা, ২০২৫ জারি’ করা হয়েছে।

নীতিমালায় প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রাপ্তির সংখ্যা নির্ধারণ প্রসঙ্গে বলা হয়, গণমাধ্যমে কর্মরত সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক, উপসম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, বিভাগীয় সম্পাদক, প্রতিবেদক, আলোকচিত্রী ও ভিডিও গ্রাফারদের মোট সংখ্যার আনুপাতিক হারে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রদান করা হবে। তবে কার্ড প্রদানের সংখ্যা কোনোক্রমেই মোট সংখ্যার ৩০ শতাংশের বেশি হবে না এবং একক কোনো প্রতিষ্ঠান ১৫টির বেশি কার্ড পাবে না। উল্লিখিত ব্যক্তিদের তালিকা প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্যাডে সিলসহ প্রদান করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, এই তালিকায় উল্লিখিত সাংবাদিকের বেতন ও নিয়োগ প্রাপ্তির প্রমাণাদিসহ অন্য যেকোনো তথ্য অ্যাক্রিডিটেশন কমিটি প্রয়োজন মনে করলে যাচাই-বাছাই করবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের তথ্যে ভুল পাওয়া গেলে সেই প্রতিষ্ঠানের কার্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা সর্বনিম্ন দুই বছর হতে সর্বোচ্চ ০৫ বছর পর্যন্ত স্থগিত করা যাবে।

নীতিমালায় বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের মেয়াদকাল হবে তিন বছর। প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডে ইস্যুর তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কী?

সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় বা নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা সাংবাদিকদের জন্য প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যু করে থাকে। সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে নানাভাবে সহযোগিতা করে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড। স্থায়ী এবং অস্থায়ী দুই ভাবে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পাওয়া যায়। কার্ডটির মাধ্যমে সাংবাদিকরা নির্দিষ্ট স্থান বা অনুষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ পান।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে নির্দিষ্টসংখ্যক প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই কার্ড দেওয়া হয়। আবার নির্দিষ্ট সময় পর পর তা হালনাগাদ করতে হয়।

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের সুবিধা

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সাংবাদিকদের এক ধরনের স্বীকৃতি দেয়। এটি বাড়তি একটি পরিচয়পত্রও বটে। যা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পেশাগত ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখে। প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড থাকলে সাংবাদিকরা বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠান, সংবাদ সম্মেলন, রাষ্ট্রীয় আয়োজন এবং উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঘটনা বা অনুষ্ঠান কাভার করার সুযোগ পান।

জাতীয় সংসদ ভবন, সচিবালয় এবং অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকা, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ সীমিত, সেখানে সাংবাদিকতার প্রয়োজনে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারেন।

সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্য সংস্থার সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারেন। প্রয়োজনীয় তথ্য বা ব্যাখ্যা পাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড থাকলে সুবিধা পাওয়া যায়। সরকারি নীতিমালা, প্রতিবেদন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে একজন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সহায়ক ভূমিকা রাখে।

যেভাবে পাওয়া যায়

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রদান এবং তার ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন সংক্রান্ত নির্দিষ্ট নীতিমালা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত হয়, যা অনুযায়ী যোগ্য সাংবাদিকদের জন্য কার্ডটি ইস্যু করা হয়।

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পেতে হলে সাংবাদিকদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। যার মধ্যে রয়েছে- তাদের নির্দিষ্ট গণমাধ্যমে বৈধভাবে যুক্ত থাকতে হয়, সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে সুপারিশপত্রের প্রয়োজন হয়।

কোনো সাংবাদিক যদি নীতিমালা ভঙ্গ করেন, তাহলে তার কার্ড বাতিল বা স্থগিত করার ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া গুরুতর কোনো আইনি অপরাধে অভিযুক্ত হলে কিংবা পেশাগত অগ্রগতি ও আচরণে সংকট তৈরি হলে তার কার্ড বাতিল হতে পারে। সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল বা স্থগিত হলেও পেশাগত কাজ পালনে বাধা থাকে না।

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top