হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে সারাদেশ উত্তাল, শাহবাগসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ

জুলাই অভ্যুত্থানের নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সারাদেশ। পাহাড় থেকে সমতল—হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতেই রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধারা। একই সঙ্গে ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করা হয়।

বিক্ষোভে সরাসরি অংশ নেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমরাও। তারা শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও ডাকসু নেতারাও রাজপথে নেমে হত্যার বিচার দাবি করেন। আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী লড়াই থামানো যাবে না।

হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি ও শনিরআখড়া এলাকায় ছাত্র-জনতা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-ডেমরা সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন শতশত রোগী ও যাত্রী।

রাতে রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুর এলাকাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে প্রথম আলো কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর কিছু সময় পর আগুন দেওয়া হয় ইংরেজি পত্রিকা দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়েও। আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে আটকা পড়েন কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। পরে দমকলবাহিনীর সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়। ধানমণ্ডি ৩২ ও ছায়ানট এলাকাতেও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যায়।

শুধু রাজধানীতেই নয়, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে রাতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধরা। সেখানে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। রাজশাহীতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়।

সিলেট ও বরিশালে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। নেত্রকোনায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিচার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। জামালপুরে হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি ওঠে। নিজ জেলা ঝালকাঠিতেও বিক্ষোভে নামেন সাধারণ মানুষ। সেখানে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।