সত্যিই কি সাকিব বিশ্বসেরা?
রাশেদ রাসেল | প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৫৫
সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশের পোস্টারবয়। বিশ্বসেরা সেরাদের সেরা। কিন্তু সত্তিই কি তিনি বিশ্বসেরা?
স্বাবেক বিশ্বসেরারা কি বলেন এই বিষয়ে?
২০২৩ বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইয়ন মরগান বলেছিলেন বর্তমানে খেলে যাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিবের চেয়ে বেশি বিশ্বকাপে খেলার কীর্তি নেই কারো। এ কারণেই সাকিব নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।
অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতার কারণেই সাকিবকে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার ধরা হয়। সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন সাবেক এই ইংলিশ অধিনায়ক। সাকিবের এই পারফরম্যান্স তরুণ ক্রিকেটারদেরও অনুপ্রাণিত করবে বলে বিশ্বাস তার।
১৪ বছরের ক্যারিয়ারে তার যা অর্জন, তাতে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার কিছুতেই আড়ালে চলে যেতে পারেন না। তারকা এই ক্রিকেটারের জন্মদিনে কিছু পরিসংখ্যানেই দেখে নেওয়া যাক কেন তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার-
ব্যাটিং গড় মাইনাস বোলিং গড়
কোনো অলরাউন্ডারকে মূল্যায়ন করার জন্য এটি সবচেয়ে ভালো মাধ্যম বলা চলে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে স্কোরিং রেট বা ইকোনমি রেট যখন খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না। টেস্টে ব্যাটিং গড় ৩৯.৪ এবং বোলিং গড় ৩১.১২ নিয়ে সাকিব সেখানে দুর্দান্ত। দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য ৮.২৭।
২০০০ সাল থেকে তুলনা করলে, কমপক্ষে দুই হাজার রান ও ১০০ উইকেট পেয়েছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে এই পরিসংখ্যানে সাকিবের ওপরে কেবল জ্যাক ক্যালিস (২৫.০৮)।
আর সর্বকালের তালিকা দেখলেও সাকিব ঢুকে যান এলিট ক্লাবে। টেস্টে ব্যাটিং গড় ও বোলিং গড়ের পার্থক্যে টনি গ্রেইগ (৮.২৩), ইয়ান বোথাম (৫.১৪), রিচার্ড হ্যাডলি (৪.৮৬), ক্রিস কেয়ার্নস (৪.১৩) এবং কপিল দেবও (১.৪) সাকিবের পেছনে।
এই মানদণ্ডে সাকিব ওয়ানডেতেও সেরাদের তালিকায়। এই ফরম্যাটে তার ব্যাটিং গড় ৩৭.৮৬, বোলিং গড় ৩০.২১। দুটির মাঝে পার্থক্য ৭.৬৪। এই তালিকায় সাকিবের ওপরে মাত্র ৫ জন (কমপক্ষে যারা ২ হাজার রান ও ১০০ উইকেট পেয়েছেন)। তারা হলেন- জ্যাক ক্যালিস (১২.৫৬), ভিভ রিচার্ডস (১১.১৬), ল্যান্স ক্লুজনার (১১.১৫), শেন ওয়াটসন (৮.৭৪) ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস (৮.৫৮)।
চূড়ান্ত টেস্ট ম্যাচ পারফরম্যান্স
টেস্টে একই সঙ্গে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট বিরল অর্জনের একটি। সাকিব যা করে দেখিয়েছেন। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনায় প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রান করেন সাকিব। এরপর বল হাতে প্রথম ইনিংসে ৮০ রানে ৫টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে নেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতে ১৬২ রানে।
সাকিবের আগে ও পরে এমন কীর্তি গড়তে পেরেছিলেন শুধু ইয়ান বোথাম (১৯৮০) ও ইমরান খান (১৯৮৩)। ইমরান খানের কীর্তির পর এমন বিরল নজির দেখতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩১ বছর।
আরো কিছু পরিসংখ্যান
* টেস্টে ৩ হাজার রান ও ২০০ উইকেট, ডাবলের এই কীর্তিতে সাকিব দ্রুততম। এই কীর্তি গড়তে সাকিবের লেগেছে ৫৪ টেস্ট।
* ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট ওয়ানডে অভিষেক সাকিবের। এই সময়ে সাকিব ম্যাচ সেরা হয়েছেন ২১ বার। এই সময়ে তার চেয়ে বেশিবার ম্যাচসার হয়েছেন বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স ও তিলকরত্নে দিলশান।
* ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান ও ২৫০ উইকেটের ডাবলের কীর্তি রয়েছে এমন ৫ জনের একজন সাকিব। অন্য চারজন- জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা), আবদুল রাজ্জাক (পাকিস্তান), সনৎ জয়াসুরিয়া (শ্রীলঙ্কা) এবং শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান)।
* তিন ফরম্যাটেই দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় প্রতিটা ক্ষেত্রে সাকিব আছেন সেরা তিনে।
আমরা গর্ব করতেই পারি আমাদের একজন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আছেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।