শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

হৃদয়ের লড়াকু সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২২৮

রাহুল রাজ | প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫:০১

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

৩৫ রানে নেই ৫ উইকেট। এমন ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে টেনে তোলেন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। তাদের ব্যাটে লড়াইয়ে ফেরে টাইগাররা। ফিফটি করে জাকের ফিরলেও দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন হৃদয়।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৫ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই মোহাম্মদ শামির বলে আউট হন ওপেনার সৌম্য সরকার।

তার বিদায়ের পর ক্রিজে এসেই ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ বলে খেলে রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হন তিনি। এতে শুরুতেই চাপে পড়ে টাইগাররা।

এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে দলীয় ২৬ রানে ১০ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মিরাজ।


এরপর দলীয় ৩৫ রানে পর পর জোড়া উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ২৫ বলে ২৫ ও রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম।

এরপর জাকের আলী অনিককে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তাওহিদ হৃদয়। দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। ভারতের বোলারদের সামলে ৮৭ বলে ফিফটি তুলে নেন জাকের। ১৫৪ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার।

দিন শেষে বাংলাদেশ যে ফলাফল করুন না কেন ক্রিকেট ভক্তদের মনে সারাজীবন হৃদয়ের এই সেঞ্চুরি চিরস্থান করে রাখবে। হয়ত হৃদয়ের আফসোস থাকবে অপরাজিত থাকতে না পারার আক্ষেপ।

হৃদয়-জাকিরের জোড়া অর্ধশততে স্কোর বোর্ড সচল। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে টিম যখন আইসিউইতে। তখন ত্রাণকর্তার ভূমিকায় আবির্ভূত হয় হৃদয় ও জাকির। কয়েক দফা জীবন পেয়ে স্কোর বোর্ড সচল রাখেন এই দুই তরুনতুর্কি। তাদের ব্যাটিং দেখে মন হচ্ছিল এটা টেস্ট ম্যাচ। কিন্তু এই ধারণা ভুল প্রমানিত হয় গায়ের রঙ্গীণ জার্সিতে। সাড়ে তিন গড়ে ধুকে ধুকে রান তোলার গতি এগিয়ে চলতে থাকে।

১৫৪ রানের জুটি ভাঙ্গেন তৃতীয় উইকেট পাওয়া সামি। ৬৮ রানে জাকির কোহলির হাতে তালুবন্ধী হলে এই জুটির অবসান হয়।

এর আগে, কে কার আগে কত দ্রুত আউট হতে পারে সেই প্রতিযোগীতায় নেমেছিল টিম বাংলাদেশ। দলীয় ৩৫ রান তুলতেই সাজ ঘরে ৫ ব্যাটার। ০,০,৫,৫, এটা ছিলো চার ব্যাটারের নামের পাশে। তানজিম তামিম ২৫ রান না করলে এই স্কোর হতো আরো নগন্য। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তাতেই ভারতীয় বোলারদের তোপের মুখে পড়ে শান্ত বাহিনী। এই আউট হবার মিছিল এর উদ্ভোধন করেন সৌম্য সরকার। ফেরেন ০ রানে। সেই পথ অনুসরণ করেন দলীয় অধিনায়ক শান্ত। জোড়া শুন্য রানে দুই উইকেট হারালে ভক্তরা বুঝে যায় আজ কপালে শনি আছে। শুধু শনি নয় কোন গ্রহই যে আজ বাংলাদেশের প্রতি মুখ ফেরায়নি তা বোঝা যায় পরের উইকেট পতনে। দলীয় ৩৫ রান সাজ ঘরে নিজেদের শান্ত করেন রান তোলার দায়িত্বে থাকা প্রথম পাঁচ জন। দলীয় ১৪ ওভারে স্কোর বোর্ডে রান দাঁড়িয়েছে ৫ উইকেটে ৫৪।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যাবার আগে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হুঙ্কার দিয়েছে বাংলাদেশ এবার চ্যাম্পিয়ান হবে। সেই গর্জনে চোখে রঙ্গীন চশমা পরে স্বপ্নের পৃথিবীতে বিচরণ করছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা।

আজ উড়তে থাকা ভারতে বিপক্ষে প্রমান হবে শান্তর হুঙ্কার কী শুধুই লোক দেখানো ছিলো নাকি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তর করার ডাক।


দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় শুরু হয় বিকেল ৩টায়। সময়ই সাক্ষি দেবে কে বাঘ আর কে বিড়াল। দুবাইয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচ কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে। তা বোঝা যাবে প্রতি বলে বলে।

২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে পারফরম্যান্স তলানিতে হলোও এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপার স্বপ্ন বাংলাদেশের। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ১২টি ওয়ানডে খেলে মাত্র ৪টিতে জিতেছে টাইগাররা। সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান শাহিনসের বিপক্ষেও পাত্তা পায়নি টিম টাইগার্সরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশকে নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী নন রিকি পন্টিং, এবি ডি ভিলিয়ার্সের মত কিংবদন্তীরা। তাদের মতে, বড় দলকে হারানোর মত সামর্থ্য নেই বাংলাদেশের।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top