নীলফামারীতে গর্ভবতি মায়ের ভুল চিকিৎসা পত্রে রোগির আতঙ্ক

নীলফামারীর ডিমলা সদর ইউনিয়নের পাটোয়ারী পাড়ার দিনমজুর মাহবুর ইসলামের স্ত্রী কল্পনা আকতার। এবারে তাঁর প্রথম গর্ভধারন। নয় মাসের গর্ভবতী তিনি। গত বৃহস্পতিবার সকালে শ্বাশুড়ী রানী বেগমকে সাথে নিয়ে আসেন ডোমার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে কর্তব্যরত মিডওয়াইভ সুরভি আকতার ওই গৃহবধুর প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কম্পিউটারে কম্পোজকৃত একটি ব্যবস্থাপত্র তার হাতে তুলে দেন।

প্রেসক্রিপশনে গর্ভবতী কল্পনা আকতারকে ২৪ ঘন্টায় ৯টি ৫০০ মিলিগ্রাম ক্ষমতাসম্পন্ন নাপা (প্যারাসিটামল) ও ২০ মিলিগ্রাম ক্ষমতাসম্পন্ন ইসমোপ্রাজল ৬টি করে সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট (গাইনি এবং অবস) ডাঃ হাসিনা ফেরদৌসি এ প্রসঙ্গে জানান, এটি অবশ্যই একটি ভূল চিকিৎসা। যা মানবদেহে ক্ষতিকর এবং বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। দ্রুত ওষুধ প্রয়োগ বন্ধ করা অত্যাবশ্যাক।

কল্পনা আকতারের বলেন, আমরা অশিক্ষিত এবং ওষুধ সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই। ডাক্তার যা দেয়, তাই আমরা বিশ্বাস করে সেবন করি। প্রেসক্রিপশনের এ ওষুধ সেবন করলে আমার ও আমার গর্ভের সন্তানের যে কি হতো? আমি এর বিচার চাই।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত মিডওয়াইভ সুরভী আকতার জানান, অসাবধানতায় কম্পিউটার কম্পোজে এটি ভূল হয়েছে। আমি প্রিন্ট কপি যাচাই না করে রোগিকে ব্যবস্থাপত্রটি প্রদান করেছি। এটি আমার ভূল হয়েছে।

ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. রাশেদুজ্জামান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন ভূল কোন চিকিৎসকের হতে পারেনা। তবে দালালদের চক্র এমনটি করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন নীলফামারী জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ডা. দিলীপ কুমার বলেন, মিডওয়াইফ কোন চিকিৎসকের তালিকায় পড়ে না। তিনি কিভাবে একজন গর্ভবতী মহিলার ব্যবস্থাপত্র দিলেন? কম্পিউটার কম্পোজে ভূল হতে পারে এটা অযৌক্তিক। কম্পোজের পরে ব্যবস্থাপত্রটি অবশ্যই যাচাই করে তিনি তো স্বাক্ষর করেছেন।

নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির এ প্রসঙ্গে জানান, ব্যবস্থাপত্রে এমন ভূল চিকিৎসকের জন্য ইতিবাচক নয়। বিষয়টি তদন্ত করে এর সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএফ৭১/এমএ/২০২২