মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

দেশের সবচেয়ে ‘খাটো মানুষ’ফেনীর রিশাত!

নিশি রহমান | প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০২:১৫

জাকির হোসেন রিশাত

ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের উত্তর চন্দনা গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন রিশাত। জন্ম ১৯৯১ সালের ১২ মে। জন্মের সময় অন্য আর দশটি সাধারণ শিশুর মতোই ছিলেন রিশাত।  এখন বর্তমান বয়স ৩২ বছর, কিন্তু তার উচ্চতা মাত্র ৩০ ইঞ্চি। বয়স বাড়লেও শারীরিকভাবে আর বাড়েননি তিনি। তাই এ যুবককে দেশের ক্ষুদ্রমানবের স্বীকৃতি দেওয়া যায় কী না, তা খতিয়ে দেখছে জেলা প্রশাসন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৩২ বছর বয়সেও রিশাতের এখনো একমাত্র ভরসা তার মা নুর হাবা। তিনি ছেলেকে গোসল, খাওয়া থেকে শুরু করে পোশাক পরিয়ে দেওয়াসহ যাবতীয় কাজ করে দেন। তবে মাঝে মাঝে এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় স্থানীয় দোকানে গিয়ে কিছু সময় কাটান তিনি। রিশাত একটু একটু করে কথা বলতে পারেন। স্থানীয়দের দেওয়া কিছু টাকা-পয়সা আর প্রতিবন্ধী ভাতায় কাটে রিশাতের জীবন।

আরও পড়ুন>>> গাজীপুরে ট্রাকচাপায় নিহত ১

পরশুরামের চন্দনা গ্রামের দিনমজুর মো. মোরশেদ খোন্দকারের দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে আজিম উদ্দিন বিয়ে করে আলাদা থাকেন। মোরশেদ খোন্দকারের দ্বিতীয় সন্তান রিশাত। মাস ছয়েক আগে রিশাতের বাবা মারা যান। পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় এখন বেশ অসহায় হয়ে পড়েছেন রিশাত ও তার মা।

 রিশাত ও তার মাস্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রহিম বলেন, উচ্চতার সঙ্গে ওজনও কম রিশাতের। জন্মের পর থেকে এই মানুষটাকে কম ভুগতে হয়নি। একজন স্বাভাবিক মানুষ যা যা করতে পারে, কিন্তু তা করতে পারে না রিশাত। শিশুকালে স্কুলেও গিয়েছিল ।কিন্তু তার সহপাঠীদের নানা মন্তব্য শুনতেন বলে পড়াশোনা আর করা হয়নি রিশাতের।

তিনি আরও বলেন, ছয় মাস আগে রিশাতের বাবা মারা যায়। বড় ভাই পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। বর্তমানে শেষ অবলম্বন হচ্ছে তার মা। প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও তা দিয়ে চলছে না তাদের। তাই অভাব-অনটনে মায়ের সঙ্গে অনেকটা কষ্টে জীবন পার করছে রিশাত।

রিশাদের মা নুর হাবা বলেন, শারীরিক দুর্বলতার কারণে সারাবছর ছেলের চিকিৎসা করাতে হয়। তাছাড়া পরিবারের আয়-রোজগার করার মতো কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছি।

পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল বলেন, সম্ভবত রিশাত ফেনী জেলার মধ্যে সবচেয়ে ছোট আকৃতির মানুষ। তার বয়স ৩২ হলেও উচ্চতার দিক থেকে এখনো শিশুর মতো। বিষয়টি এর আগে আমাদের জানা ছিল না। পরবর্তীকালে তাকে সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শামসাদ বেগম বলেন, বিষয়টি আমি আপনাদের কাছে শুনলাম। রিশাতকে পরবর্তীকালে সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top