শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঘোড়াঘাটে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা নিজেই এখন ধান ব্যবসায়ী

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থেকে | প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২১, ০০:০২

ঘোড়াঘাটে রানীগঞ্জ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা এভাবেই ট্রাক ভর্তি করে বাহির থেকে ধান ক্রয় করে গুদামে দিচ্ছেন

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ সরকারী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা নিজেই এখন ধান ব্যবসায়ী। সরকার কৃষকের উন্নয়ন ও ধান চাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয় শুরু করেছেন। চলতি বোরো মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলার একটি পৌরসভা সহ ৪টি ইউনিয়নে ২৯৭ মে: টন ধান ক্রয়ের নির্দেশনা আছে।

নির্দেশনা মোতাবেক ২৮ এপ্রিল তারিখে উপজেলা ক্রয় কমিটি সরকারী মূল্যে লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয়ের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোন কৃষক না থাকলেও কৃষি অফিসের দেয়া তালিকা অনুযায়ী লটারই করা হয়। এতে উপজেলায় ১২৯৭ জন কৃষক সরকারীভাবে খাদ্য গুদামে ১ মে: টন করে ধান দেয়ার সুযোগ পাবে।

২৪ মে উপজেলার রানীগঞ্জ খাদ্য গুদামে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আতোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে গুদাম কর্মকর্তা সুমন মিয়া গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ থেকে এক ট্রাক ধান এনেছেন। যার পরিমাণ ৩৫০ বস্তা অর্থাৎ ১২ মে: টন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গুদামের উত্তর পার্শ্বে গিয়ে দেখা যায় একটি ধানের বস্তা ভর্তি ট্রাক।

এ সময় ট্রাক চালক গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কুমড়াডাঙ্গা গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র লিটন মিয়ার সাথে কথা হলে সে জানায়, ধানগুলো মহিমাগঞ্জ থেকে এনেছে। ইতিপূর্বেও এক ট্রাক অর্থাৎ ৩৫০ বস্তা এনেছিল। সে ক্যামেরার সামনে এমন বক্তব্য প্রদান করেছে।

এ বিষয়ে গুদামে অবস্থানরত উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আতোয়ার হোসেনের সাথে গুদামে বসা অবস্থায় কথা হলে তিনি প্রথমে জানায়, ট্রাক দেখে তিনি মনে করেছেন চালের ট্রাক। পরে গিয়ে দেখেন, সেটি ধানের ট্রাক। এ ব্যাপারে তিনি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তা ক্যামেরার সামনে বলতে কিছুতেই রাজি হননি। তবে তিনি গুদাম থেকে ট্রাকটি বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন গুদাম কর্মকর্তাকে।

গুদাম কর্মকর্তা ট্রাকটি তাৎক্ষনিক অন্যত্র সরে নিয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পর পরই আবার নিয়ে এসে ধান গুলো আনলোড করেন গুদামে। এমন সময় খাদ্য কর্মকর্তা উপজেলা অফিসে যাওয়ার কথা বলে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে যান। ২৪ মে পর্যন্ত রানীগঞ্জ খাদ্য গুদামে বরাদ্দকৃত ৩২৭ মে: টন।

এর মধ্যে ২১২ মে: টন ধান ক্রয় করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত কৃষকদের নিকট থেকে প্রতি টনে ১ হাজার টাকা করে দিয়ে কার্ড গুলো ক্রয় করে গুদাম কর্মকর্তা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিজেই গুদামে ধানের ব্যবসা করছেন। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ প্রতিনিধির নিকট অবগত হলে তিনি ঘটনাটি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top