মারা গেলেন ‘জেমস বন্ড’ খ্যাত পরিচালক লি তামাহরি

পর্দায় ও পর্দার বাইরেও ছিলেন এক অসাধারণ সৃষ্টিশীল ব্যক্তিত্ব। মারা গেছেন নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক লি তামাহরি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

পরিচালকের পরিবার রেডিও নিউজিল্যান্ডকে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন তামাহরি। পরিবারের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়,

“কারিশম্যাটিক ও অসাধারণ সৃষ্টিশীল এই মানুষটি মাওরি শিল্পীদের শুধু পর্দাতেই নয়, বরং বাস্তব জীবনেও তুলে ধরেছেন। তাকে হারানো আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”

১৯৫০ সালে ওয়েলিংটনে জন্ম নেওয়া তামাহরি ছিলেন মাওরি ও ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। ১৯৭০-এর দশক থেকেই তিনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের চলচ্চিত্রশিল্পে কাজ শুরু করেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি জিওফ মারফির একাধিক সিনেমায় টেকনিশিয়ান হিসেবে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রযোজনা ‘মেরি ক্রিসমাস, মি. লরেন্স’ (নাগিসা ওশিমা পরিচালিত) ছবিতে তিনি ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন।

পরিচালক হিসেবে তামাহরি বড় পরিচিতি পান ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওয়ান্স ওয়ার ওয়ারিয়র্স’ ছবির মাধ্যমে। অকল্যান্ডে টিকে থাকা এক মাওরি পরিবারের সংগ্রাম ও সহিংসতা নিয়ে নির্মিত এই তীব্র ড্রামা চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয়কারী সিনেমায় পরিণত হয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।

এর সাফল্যের পর তামাহরি পা রাখেন হলিউডে। তিনি পরিচালনা করেন ‘মালহোল্যান্ড ফলস’ (১৯৯৬), যেখানে অভিনয় করেছিলেন নিক নল্টে ও চাজ প্যালমিন্টেরি।

তবে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আলোচিত কাজ নিঃসন্দেহে ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জেমস বন্ড সিরিজের ছবি ‘ডাই অ্যানাদার ডে’, যেখানে বন্ড চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পিয়ার্স ব্রসনান। মুক্তির পর ছবিটি বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে বিপুল সফলতা অর্জন করে এবং তামাহরিকে আন্তর্জাতিক খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়।

লি তামাহরির মৃত্যুতে নিউজিল্যান্ডের চলচ্চিত্র অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সহকর্মীরা বলছেন, “তিনি ছিলেন এমন এক গল্পকার, যিনি নিজের সংস্কৃতি, সংগ্রাম ও মানবতার গল্পকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছিলেন।”

এনএফ৭১/ওতু