টকশোতে বারিশ হককে একহাত নিলেন রুবাইয়াত ফাতিমা তনি, কান্নার রোল

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:৩৮

ছবি: সংগৃহীত

মডেল ও ব্রান্ড প্রমোটর বারিশ হক ও উদ্যোক্তা রুবাইয়াত ফাতিমা তনি। দেশের দুই পরিচিত মুখ। তাদের ভক্ত ও ফলোয়ারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। সম্প্রতি একটি টকশোর আয়োজন করে দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেল। আঁধারে আলোর প্রয়োজন, সংকটে প্রয়োজন সম্ভাবনা। কেমন হওয়া উচিৎ উদ্যোক্তা ও ব্রান্ড প্রমোটর সম্পর্ক। মূলত এসব নিয়ে কথা বলতেই আলোচনার আয়োজন হয়। সেখানেই তর্কযুদ্ধে অংশ নেন বারিশ হক ও ফাতিমা তনি। একজন আরেকজনের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ে মারেন।

বির্তকের শুরুতেই বারিশ হক বলেন, ভুল বুঝাবুঝি নিরসনে উদ্যোক্তা ও ব্রান্ড প্রমোটরদের সম্মান ও বিশ্বাসের সম্পর্ক থাকা জরুরি। ক্রেতাদেরও প্রতি প্রমোটরদের দায়বদ্ধতা থাকা উচিৎ। যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও ফলোয়ারের ভিত্তিতে প্রমোটরদের মূল্য নির্ধারণ হয়।

রুবাইয়াত ফাতিমা বলেন, এক ঘন্টার লাইভে একজন প্রমোটর কত চার্জ নেবেন তার সঠিক নীতিমালা এখনও গড়ে উঠেনি। কোনো ব্রান্ড প্রমোট করার আগে দেখে নিতে হবে সেটি ভোক্তার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কিনা। কিন্তু সেটি অনেক প্রমোটর মেনে চলেন না। দিনশেষে আমরা একে অপরের পরিপূরক। সামনা সামনি বসেই সমস্যা সমাধান করা উচিৎ।

কিন্তু বিপত্তি বাধে ভিন্ন জায়গায়। তনি তার ফেরিফাইড ফেসবুক পেজে বারিশ হককে একহাত নিয়েছেন। তনির প্রশ্নের বেড়াজালে নাকি বারিশ হক কান্না করে ফেলেছেন। তনি অভিযোগ করেন তার প্রশ্নের অংশ কেটে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে তনি বলেন,  তাহলে আসেন আসল কাহিনী বলি, টকশোর বিষয় ছিলো- উদ্যোক্তা বনাম ব্র‍্যান্ড প্রোমোটার সম্পর্ক, সংকট এবং সমাধান, উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরী,আয়োজক গফ খরসড়হ কযধহ ভাইয়া। টকশো তে একটা নির্দিষ্ট সেক্টর নিয়ে প্রশ্ন এবং উত্তরপর্ব হয়েছে, আমি যেহেতু একজন উদ্যোক্তা আমি অন্য সবার হয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেছি, আপা কিন্তু কোনো কিছুরই উত্তর ঠিকমত দিতে পারছিলেন না, উল্টো সে যে সেক্টরের হয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছেন সে নিজের কলিগদের উপর সব দোষ চাপিয়ে দিলেন।

আমি যখন স্লিমিং টি, কফি, টেবলেট এইসব কেন প্রোমোশন করে আবার জিমে বা লেজার ক্লিনিকে যেতে হয় এই কথা উঠাই তখন আপার ভাল লাগে নাই, মনের মত হয় নাই। তাই তিনি কোনোরকম টকশো শেষ করেই ছবি না তুলেই কান্নার চেহারা নিয়ে বের হয়ে গেলেন। এবং গাড়িতে বসে লিমন ভাইকে কল দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দিলেন!  লিমন ভাই, আমিসহ আরো প্রায় ৬-৭ জনের সামনে প্রায় ৩০ মিনিট তার গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা চালালেন।

উনি হয়তো ভেবেছিলেন টকশোতে উনার রূপ নিয়ে, পোশাক নিয়ে দীপ্তি প্রশ্ন করবেন। উনার কান্নাকাটি এবং অনুরোধে চ্যানেল আই টকশো থেকে  আমার অনেক কথা কেটে এডিট করে প্রচার করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এত এডিটের পরও ভিডিওর নিচে আপা শুধু পাবলিকের পচানি খাচ্ছেন।আপা বুঝতে পারেননি শোঅফ আর নেকামো করে ভাইরাল হওয়া যায় কিন্তু জনপ্রিয়তা পাওয়া যায় না।

এর একদিন আগে আরেক পোস্টে তনি অভিযোগ তোলেন, মানুষের কান্না থামানোর জন্য আমার বক্তব্য অনেক কেটে দেয়া হয়েছে এবং ইডিট করে দেয়া হয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম- ১. রং ফর্সাকারী কেনো প্রোমোট করে তারা, যেখানে সারা পৃথিবীতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এত আন্দোলন হচ্ছে। আর এই ক্রিমগুলো তারা ইউস করে কিনা!

২. ধরেন, একটা শাড়ীর ব্র‍্যান্ডের লাইভের জন্য ১ ঘন্টায় ৪০ হাজার টাকা নিলেন, আবার ২ ঘন্টা পরে আরেকটা শাড়ীর ব্র‍্যান্ড পেলে আবার লাইভ করলেন, তাহলে একই দিনে তার পেইজের কাস্টোমার কোন পেইজ থেকে শাড়ী কিনবে! ব্যাবসায়ীর প্রতি আপনার দ্বায়বদ্ধতা কি? ৪০ হাজার কি শুধু ১ ঘন্টার জন্য!

৩. বর্তমান ভাইরাল টপিক- সকালে লাইভ করে বলেন স্লিমিং টি খেয়ে চিকন হতে, দুপুরে কোনো লেজার ক্লিনিকের লাইভ করে বলেন লেজার করে চিকন হতে, রাতে কোনো জিম সেন্টারের লাইভ করে বলেন জিমে আসতে, তাহলে কাস্টোমার কোনটা করবে! আপনার দর্শকদের প্রতি দায়বদ্ধতা কি? এই স্লিমিং টি বা কফি বা টেবলেটগুলো কি শারীরের জন্য আদৌ ভাল! আপনি কি নিজে আসলে এইসব খান!!!

এরপরই ধেয়ে আসতে শুরু করে নেটিজেনদের মন্তব্য। শাম্মী হক নামের এক নেটিজেন বলেন, কাপড়ের বেলায় ঠিক বলেন নাই। কারণ কাপড় কেনাটা সামর্থ্য আর রুচির ব্যাপার। একদিনে দুইটা ড্রেসের প্রমোট করলে ও যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী রুচি অনুযায়ী ওই লাইভ দেখে ড্রেস কিনবে। কিন্ত প্রসাধনী আর স্লিম হওয়ার জন্য যে প্রোডাক্ট ইউজ করবে সবই যার যার নিজের রুচি আর ইচছা।কিন্ত কাপড় ছাড়া আর অন্য দুই প্রোডাক্টের সাইড এফেক্ট আছে। যার সন্দেহ লাগবে কিনবে না। আর যার সন্দেহ লাগবে না তিনি কিনে ইউজ করবেন।

শাহনাজ আফরিন নামে একজন বলেন, বারিশ হকের যেমন টাকার দিকে না চেয়ে ব্যক্তিত্ব রেখে ব্রান্ড প্রোমোট করা উচিত। তেমনি তনিরও এতো প্রশংসা করা উচিত না। সে ভালো কথা বলতে পারে, ভালো উগ্র গালাগালি করতে পারে। আর এভাবেই কিন্তু ভাইরাল হয়েছে। তখন এই পাবলিকগুলাই তাকে ট্রল করেছে। তাই একজন এই টাইপের মানুষের সাথে নরমাল কোন মানুষ কথায় পারবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই তার চাপার সাথে কেউ পারবে না। এটা উৎসাহ দেওয়ার কিছু নাই। দুজনের পেশা নিয়ে কেলেংকারী আছে।

সালমা এন্ড শাকিল নামে নেটিজেন বলেন, ব্যান্ড প্রোমোটারদের কাজ এইটা। তারা ওজন কমানোর জন্য স্লিমিং টি খেয়ে ব্যান্ড প্রমোট করে। কিন্তু জিমে গিয়ে নিজের বডি সেফ তুলে ধরে। আমার সাদা মনে একটাই প্রশ্ন যে, তারা জিম করতে গেলে স্কিন ফ্যান এবং টি শার্ট কেন পড়বে। এটা কি জিম করছে, নাকি জিম করার নামে নোংরামি চলছে। পারলে প্রশ্নটার উত্তর দিয়ে যাবেন। আমি তনি আপুর সাথে একমত আপু আমার মনের কথাটাই বলছে।

নেটিজেন তান জো বলেন, সাহসী নারী। ত্বক ফর্সাকারী ক্রীম নিয়ে উনি যে প্রশ্ন করেছেন তার জন্য ভালো লাগলো। যেখানে বিজ্ঞান বলে এসব ক্রিম ব্যবহার করা ক্ষতি। সেখানে দুই পয়সার বারিশ টাকার লোভে এগুলো প্রমোট করে। কতো মেয়ের যে স্কিন নষ্ট হয় হিসাব নাই।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top