এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদন
আযমীকে হত্যার পরামর্শ দিয়েছিলেন হাসিনা, তবুও কীভাবে বেঁচে গেলেন
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫:৫৬
ক্ষমতায় থাকাকালে গুম এবং হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এমনকি অভিযোগ রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আজমের পুত্র সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীকেও হত্যার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনাই আমান আযমীকে সরাসরি গুম-খুনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এ বিষয়ে জানেন এমন কর্মকর্তারা হিউম্যান রাইটসকে জানিয়েছেন এ তথ্য।
গত সোমবার এইচআরডব্লিউ প্রকাশিত ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভ্যুলুশন-এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এক সেনা কর্মকর্তার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়নাঘরে আযমীর বন্দি থাকা ও তার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে শেখ হাসিনা সরাসরি অবগত ছিলেন। তিনি (আযমী) ফেলো মিলিটারি অফিসার হওয়ায় তার মুক্তির বিষয়ে বারবার শেখ হাসিনার কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন ওই কর্মকর্তা। কিন্তু শেখ হাসিনা প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি এক পর্যায়ে তিনি (শেখ হাসিনা) আযমীকে হত্যার পরামর্শ দেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, আমি সেটা করতে পারিনি। তবে এরপর আমি তার মুক্তির বিষয়ে কথা বলা বন্ধ করে দেই। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওই প্রতিবেদনে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের নির্যাতন বা ক্ষমতার অপব্যবহারের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মাইকেল চাকমা, মীর আহমেদ বিন কাসেম (আরমান) ও আবদুল্লাহ আমান আযমীকে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনজনের ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ তাদের হেফাজতে থাকা এসব ব্যক্তির বিষয় অস্বীকার করেছে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বড় মগবাজারের বাসা থেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাকে আটক করা হয়।
পরে আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আটকের বিষয়টি একাধিকবার দাবি করা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হতে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ৮ বছর পর গত ৭ আগস্ট বাড়ি ফিরেন আযমী। হাসিনার পলায়নের পর আযমীসহ অনেকে আয়নাঘর থেকে মুক্তি পান।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।