জুলাই আন্দোলনে সেনাবাহিনীকে ‘সতর্ক’ করেছিলেন ভলকার তুর্ক
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২৫, ১১:২২

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চরম মুহূর্তে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে কোন ধরনের দমনপীড়নে অংশ না নিতে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিলেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। সম্প্রতি বিবিসির সাংবাদিক স্টিফেন স্যাকুরের উপস্থাপনায় সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘বিবিসি হার্ডটক‘-এ ভলকার তুর্ক এ তথ্য জানিয়েছেন। বিবিসির ওয়েবসাইটে বুধবার (৫ মার্চ) অনুষ্ঠানের এ পর্ব প্রকাশ করা হয়।
বিবিসির সাংবাদিক স্টিফেন সাকারকে তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আগের সরকারের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠেছিল। তখন তাদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছিল।
ভলকার তুর্ক বলেন, তাদের জন্য বড় আশার জায়গা ছিল আসলে আমরা কী বলি, আমি কী বলি, আমরা কী করতে পারি। আমরা ঘটনাটি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরি এবং সেনাবাহিনীকে সতর্ক করি— যদি তারা এতে জড়ায়, এর অর্থ দাঁড়াবে তারা হয়তো আর শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশ হিসেবে থাকতে পারবে না। ফলশ্রুতিতে আমরা পরিবর্তন দেখলাম। ফলস্বরূপ, আমরা পরিবর্তন দেখতে পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, যখন মুহাম্মদ ইউনূস অন্তবর্তী সরকারের নতুন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার কাছে জানতে চান, আমি তাদের জন্য একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পাঠাতে পারব কি না, যেন পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করা যায় এবং যা ঘটেছিল তা তদন্ত করা হয়। আমরা সেসব করছিলাম, এটি প্রকৃতপক্ষেই সাহায্য করেছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, গত নভেম্বরে যখন তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন, তখন তাকে তার ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের অবস্থান নেওয়া, কথা বলা এবং তাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য সত্যিই কৃতজ্ঞ ছিল।
সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধের বিষয়ে ভলকার তুর্ক বলেন, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলোর ওপর এর প্রভাব পড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওয়াশিংটনের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা হবে। কারণ, ইউএসএআইডি এবং বিদেশি সহায়তা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এসময় সুদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, সিরিয়ায় মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যারা কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পাশের দেশগুলোতে থাকা সহিংসতার শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। সিরিয়া ও লেবাননের ক্ষেত্রে এটা রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ভলকার তুর্ক বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে তারা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফিলিস্তিনের গাজার পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর উল্লেখ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, সেখানে যা ঘটছে, তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।
এক প্রশ্নের উত্তরে ভলকার তুর্ক জানান, এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বারবার সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে। বর্তমানে ৫৯টি দেশে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এসব সহিংসতার পেছনে ভূরাজনৈতিক কারণ দায়ী।
বিষয়: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান গণঅভ্যুত্থান সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক স্টিফেন সাকার
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।