রাবিতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে অচলাবস্থা: শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থী মুখোমুখি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা ইস্যুতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ঘোষণা দিয়েছে, লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতি কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক দিয়েছে। ফলে টানা দ্বিতীয় দিন ফাঁকা হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাস।

সোমবার প্রশাসন ভবনসহ একাডেমিক ভবনে ঝুলছে তালা। বাস চললেও শিক্ষার্থী অনুপস্থিত, দোকানপাটও ফাঁকা। gate-এ বাড়ি ফিরতে আসা শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।

বাংলা বিভাগের ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, “আমরা পড়াশোনার জন্য এখানে এসেছি, কিন্তু ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ও সংঘাতের কারণে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি, শিক্ষক-কর্মকর্তারা কর্মবিরতিতে রয়েছেন। রাকসু নির্বাচন হবে কি না, তা অস্পষ্ট।”

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মেহেদী হাসান বলেন, “অস্থির পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরাও বিভ্রান্ত। নির্বাচন কবে হবে, বোঝা যাচ্ছে না।”

ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পোষ্য কোটা বাতিল ও ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দাবিতে আমরা অনড় আছি। প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।”

ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, “গুটিকয় শিক্ষক-কর্মকর্তা বেশি তৎপর, তারা নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে। পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীর অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন। পূজার ছুটির পর নির্বাচন হওয়া উচিত।”

‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”

রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “ক্যাম্পাসে স্থিতিশীল পরিস্থিতি না হলে নির্বাচন বৈধ হবে না।”

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য প্রশাসন ভবন থেকে বের হলে শিক্ষার্থীরা তাকে আটকে দেয়। পরে তার বাসভবনে তালা ঝোলানো হয়। জুবেরী ভবনে ঢুকতে গেলে শিক্ষার্থীদের বাধার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। রাত ১টার দিকে উপাচার্য পোষ্যকোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।