পুরোনো স্মৃতির পটভূমিতে নতুন করে আঁচড় কাটে মেলাটি
উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হলো প্রাচীনতম বউমেলা, ঢুকতে পারেননি পুরুষরা
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৩৮

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে বসেছিল ৬৩ বছরের ঐতিহ্যবাহী বউমেলা। এ মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতা শুধু নারীরাই। সোমবার পৌর এলাকার সুজাপুরে দিনব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল থেকেই শামিয়ানা টাঙিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানিরা। মেয়েদের প্রসাধনী সামগ্রী প্রধান উপজীব্য হলেও মেলায় ছিল ছোটদের খেলনা, হস্তশিল্প, গৃহস্থালির নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও রকমারি মুখরোচক খাবার।
সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির চত্বরে আয়োজিত মেলার আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুরুষের ভিড় দেখা যায়। তবে মেলায় ঢুকতে পারেননি তারা। মূলত শিশু, কিশোরী এবং নানা বয়সের নারী ক্রেতাদের নিয়ে জমে উঠেছিল মেলাটি।
মেলায় কেনাকাটা করতে আসা প্রিয়াংকা জানান, লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে প্রতিবছর বউমেলার আয়োজন করা হয়। মেলার আগের দিন পুরো এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করা হয়। মেলার দিন সকাল থেকে শুরু হয় সাজসজ্জার কাজ, বিকেল থেকে আসতে শুরু করেন ক্রেতারা। মেলায় নারীরাই ক্রেতা ও বেশিরভাগ দোকানিও নারী। ফলে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারছেন তারা।
মেলায় আসা রাণী সরকার জানান, পুরোনো স্মৃতির পটভূমিতে নতুন করে আঁচড় কাটে মেলাটি। তাই বছর ঘুরে এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকি।
মেলায় আসা এক গৃহবধূ জানান, আমার বিয়ে হওয়ার পর থেকে প্রতিবারই এ মেলাতে এসেছি। এটা শুধু মেলা নয়, উৎসব। এই দিনটির জন্য আমরা বছরজুড়ে অপেক্ষা করি। মেলাটিতে শুধু নারীদের আগমন থাকায় কেনাকাটা, ঘোরাফেরাতে আনন্দ পাই।
সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অশেষ রঞ্জন দাস বলেন, লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে বউমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। মেলাটি জমিদার ভীমল বাবুর সময় থেকে শুরু হয়। তিনি লক্ষ্মীপূজার পরদিন এই মেলার আয়োজন করেছিলেন, যা আজও চলছে।
মেলায় পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেলাটি শুধু নারীদের জন্যই। তাই মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। বাড়ির বউয়েরা এই মেলায় আসেন। তাই এই মেলার নাম বউমেলা।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।