কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাইফগার্ড সেবা বন্ধ হতে যাচ্ছে
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:০৮

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা সি-সেইফ লাইফগার্ড এই কার্যক্রম বন্ধ করতে যাচ্ছে। তহবিল সংকটের কারণে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এই সেবা স্থগিত হবে।
সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সুগন্ধা, কলাতলী ও লাবণী সৈকতে ‘লাল-হলুদ জার্সি’ পরা লাইফগার্ডরা বিপদে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করে আসছিলেন। গত এক যুগে ২৭ জন লাইফগার্ড অন্তত ৮১৫ পর্যটকের জীবন রক্ষা করেছেন।
সি-সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র কর্মী ও ট্রেইনার মোহাম্মদ ওসমান জানান, “গত সপ্তাহে সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে সাতজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।”
সংস্থার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তহবিল সংকটের কারণে প্রকল্পের মেয়াদ কয়েকবার বাড়ানো হলেও অর্থের জোগান না থাকায় লাইফগার্ড সেবা চলতি মাসেই বন্ধ হচ্ছে।
লাইফগার্ড জয়নাল আবেদীন বলেন, “প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর থেকে লাইফগার্ড হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। সমুদ্রে কোনো পর্যটক ভেসে গেলে জীবন বাঁচাই, এখন আমাদের জীবনটাই ঝুঁকিতে।” অন্য কর্মী লামার আকরাম ত্রিপুরা জানান, ২০ হাজার টাকার বেতনে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির তত্ত্বাবধায়ক এডিএম মো. শাহিদুল আলম জানান, তহবিল সংকটের বিষয়টি পর্যটন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছে, হোটেলসমূহের মাধ্যমে লাইফগার্ড সেবা চালু রাখতে হবে।
কক্সবাজার হোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, “মাসে ১৪-১৫ লাখ টাকার ব্যবস্থাপনা হোটেলগুলো করতে পারবে কি না, তা সন্দেহের বিষয়।”
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, “লাইফগার্ড না থাকলে কত পর্যটকের মৃত্যু হতো, তা সহজে আন্দাজ করা যায় না।”
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি অবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, “পর্যটন অনুষঙ্গ হিসেবে লাইফগার্ডের অবদান অপরিসীম। সরকারি বা হোটেল কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে তা চলবে কি না, তা সময়সাপেক্ষ বিষয়।”
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।