বৃহঃস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক

মেহেদী হাসান | প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১৫:৫৫

ছবি: সংগৃহীত

‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-এর আসর বসেছে প্যারিসে। তবে শুরুতেই বিতর্ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে। কোথাও ভারতীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের পোশাক নিয়ে তরজা, তো আবার কোথাও বা ফ্রান্সের অতিথি আপ্যায়নের সহবৎ না থাকার অভিযোগ তুলে তোলপাড় বিশ্ব। এর মধ্যেই যিশুর ‘লাস্ট সাপার’-কে ব্যঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে অলিম্পিক কমিটির বিরুদ্ধে।

কী দেখানো হয়েছিল?

যিশু ও তার বারো শিষ্যের নৈশভোজের যে জগদ্বিখ্যাত ছবি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি এঁকেছিলেন সেই ফ্রেমের আদলই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু সেখানে যিশুর পরিবর্তে এক মহিলাকে দেখা যাচ্ছে। তার মাথার পিছনে রুপালি শিরোপা, যা জ্যোতির্বলয়কেই ইঙ্গিত করছে বলে মত। পাশাপাশি এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, যার সারা শরীরে নীল রঙে রঞ্জিত। কেবল ফুল ও ফলের একটি স্ট্রিং দিয়ে মাথা ও কোমর ঢাকা। দেখানো হয়েছে, এখানে তিনি যেন ‘লাস্ট সাপারে’ পরিবেশিত খাদ্য।

কেন এই বিতর্ক অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে?

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বহু নেটিজেনই একে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের অপমান বলে দাবি করেছেন। যদিও অলিম্পিক কমিটির দাবি, এটি জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই ‘লাস্ট সাপার’-এর একটি ব্যঙ্গাত্মক সংস্করণ। মানুষে মানুষে হিংসার প্রতীক হিসেবেই ওই নীল রঙের মানুষটিকে ‘খাদ্য’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে এমন ব্যাখ্যা, সাফাইয়েও বিতর্ক থামেনি।

লিবার্টি লকডাউন পডকাস্টে ক্লিন্ট রাসেল বলেছেন, ”এটা আপত্তিকর। যিশু ও তার শিস্যদের টেনে এভাবে ইভেন্ট আয়োজন করাটা মেনে নেয়া যায় না। সারা বিশ্বের ২৪০ কোটি খ্রিস্টানের কাছে অলিম্পিক কমিটি পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে তারা কোনওভাবেই স্বাগত নন।” যিশুকে একজন মহিলা হিসেবে দেখানোর কী অর্থ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সব মিলিয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান খ্রিস্টানদের জন্য অবমাননাকর বলেই মত অনেকের। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।

শো-টির শৈল্পিক পরিচালক থমাস জলি বলেছিলেন, তাদের এই মূকনাট্যের উদ্দেশ্য ধ্বংসাত্মক কিছু করা, উপহাস করা বা কাউকে আঘাত করার মতো কিছু ছিল না। বরং, তিনি এই শো-এর মাধ্যমে দিতে চেয়েছিলেন ভালোবাসার বার্তা। কিন্তু তাতে ক্ষোভ প্রশমন হয়নি। বিতর্ক থামাতে শেষে মাঠে নামতে হয়েছে আয়োজকদেরকেই।

২০২৪ অলিম্পিক গেমসের যোগাযোগ ব্যবস্থাপক অ্যান ডেসক্যাম্পস বলেছেন, 'কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি অসম্মান দেখানোর উদ্দেশ্য ছিল না। সব সম্প্রদায়ের প্রতি সহনশীলতা দেখানোর চেষ্টা ছিল আমাদের। আমরা মনে করি, আমাদের লক্ষ্য ইর্জিত হয়েছে। কিন্তু যদি কোনো কারণে কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকেন, তবে আমরা সত্যিই দুঃখিত। '




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top