কাচের বাক্সে রানির গোপন চিঠি
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৪৮
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বৃহস্পতিবার চিরবিদায়ের মাধ্যমে তাঁর ৭০ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটে। এরপরই রানি এলিজাবেথ সম্পর্কে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য।
মূলত বাকিংহাম প্যালেস আর ব্রিটিশ রাজ পরিবারের জীবনযাত্রা ঘিরে সাধারণ মানুষের কৌতূহল সবসময়ই বেশি। এবার সেই রাজ পরিবারের তথা রানির লেখা এক গোপন চিঠির কথা সামনে এসেছে। এই চিঠিটি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ নিজে হাতে লিখেছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার রানি মারা গেলেও সেই চিঠি খোলা যাবে না আরও বহু বছর। গত শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
তবে ঠিক কী এমন লেখা আছে সেই গোপন চিঠিতে? শুধু এটুকুই জানা যায়, ১৯৮৬ সালে এই চিঠিটি লিখেছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ওই চিঠিতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের মানুষের জন্য কোনো বার্তা দেওয়া আছে। সিডনি শহরের এক বিখ্যাত ভবনের এক গোপন কুঠুরিতে রাখা আছে সেই চিঠি।
ডেইলি মেইল বলছে, গত বৃহস্পতিবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা গালেও আগামী ৬৩ বছরেও সেই চিঠি খুলে পড়তে পারবেন না কেউ, এমনটাই নির্দেশ রয়েছে রানির। সদ্য প্রয়াত ব্রিটিশ এই রানির নির্দেশ ছিল, চিঠি খুলতে হবে ২০৮৫ সালে।
আর ওই চিঠিতে যা লেখা আছে, তা পড়ে শোনাতে হবে সিডনির বাসিন্দাদের। গোপন ওই চিঠিতে শহরবাসীর প্রতি রানি কোনো বার্তা দিয়ে গেছেন বলেই মনে করা হয়ে থাকে। তবে কী বিষয়ে সেই বার্তা? তা জানেন না রানির একেবারে কাছের মানুষরাও।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সিডনির কুইন ভিক্টোরিয়া বিল্ডিংয়ে সযত্নে সংরক্ষণ করা আছে চিঠিটি। ১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসে রানি ভিক্টোরিয়ার নামাঙ্কিত ওই ভবনের কিছু কাজ হয়। সেই সময়েই চিঠিটি লিখেছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
জানা যায়, একটি কাচের বাক্সে রাখা আছে রানির নিজের হাতে লেখা সেই চিঠি। চিঠি পড়ার ব্যাপারে যে নির্দেশ রানি দিয়েছেন, শুধু সেটাই দেখতে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাতে যা লেখা আছে তার বাংলা অনুবাদ করলে হয়, ‘শুভেচ্ছা! ২০৮৫ সালের একটি দিন বেছে নিয়ে চিঠিটা দয়া করে খুলবেন। আর সিডনিবাসীকে আমার মেসেজ পড়ে শোনাবেন।’
আর এর নিচেই রয়েছে রানির স্বাক্ষর।
উল্লেখ্য, কুইন ভিক্টোরিয়া বিল্ডিং উন্মুক্ত হয়েছিল ১৮৯৮ সালে। এরপর ১৯৫৯ সালে সেই ভবন প্রায় ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর মালয়েশিয়ার একটি সংস্থা ভবনটি পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করে ১৯৮৪ সালে। আর সেটিই ১৯৮৬ সালে খুলে দেওয়া হয়।
বর্তমানে সিডনির ওই ভবনটি মালয়েশিয়ার সংস্থার অধীনে রয়েছে। ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে তারা। ব্রিটেনের মতো অস্ট্রেলিয়াও ব্রিটিশ রাজ পরিবারের শাসনের অধীনস্ত দেশ।
ডেইলি মেইল বলছে, সদ্য প্রয়াত এই ব্রিটিশ রানির ব্যক্তিগত কর্মীরাও জানেন না যে, রানি ওই চিঠিতে কী লিখেছেন এবং সিডনির নাগরিকরাও এখনই তা পড়তে পারবেন না। চিঠিটি ‘অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের মেয়র’ (রাইট অ্যান্ড অনারেবল লর্ড মেয়র অব সিডনি, অস্ট্রেলিয়া)-কে উদ্দেশ্য করে লেখা।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৭০ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটে গত বৃহস্পতিবার তার চিরবিদায়ের মাধ্যমে। এর পর থেকে তার মরদেহ ছিল স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলের বলরুমে। সেখান থেকে রানির মরদেহবাহী কফিন রোববার যাত্রা শুরু করেছে; যা আগামী মঙ্গলবার লন্ডনে পৌঁছাবে।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। সর্বসাধারণের সম্মান জানানোর জন্য সমাহিত করার ৪ দিন আগে থেকেই তার দেহ রাখা হবে ওয়েস্টমিনিস্টার হলে। পরে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে এলাকার সেইন্ট পল গির্জার পাশে সমাহিত করা হবে রানিকে।
মা রানি এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস তার স্থলাভিষিক্ত হন বৃহস্পতিবারই। শনিবার ব্রিটেনের সেন্ট জেমসেস প্রাসাদে অ্যাকসেশন কাউন্সিল রানির উত্তরাধিকার ঘোষণা করে।
এ সময় ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন রাজতন্ত্রের উত্তারাধিকারী উইলিয়াম। আর তা প্রত্যক্ষ করেন তার স্ত্রী ক্যামিলা এবং ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।