শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এটা জীবনের একটা চিহ্ন, এটা এমন কোনো বিষয় নয় যেটা নিয়ে মেয়েদের লজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে

অমিতাভকে সাথে নিয়ে ঋতুস্রাব নিয়ে কথা বললেন নাতনি নভ্যা

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৩৮

অমিতাভের সাথে নাতনি নভ্যা

বলিউডের অন্যতম আলোচিত স্টারকিড নভ্যা নভেলি নন্দা। বচ্চন পরিবারের এই মেয়ে অভিনয় নয়, ব্যবসাতেই মন দিয়েছেন। অমিতাভকন্যা শ্বেতা নন্দা বচ্চন এবং নিখিল নন্দার মেয়ে নভ্যা। অল্প বয়সেই নভ্যা একজন সফল উদ্যোক্তা, পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন নভ্যা।

সম্প্রতি প্রকাশ্য সভায় দাদু অমিতাভ বচ্চনের উপস্থিতিতে ঋতুস্রাব বা মাসিক নিয়ে কথা বললেন নভ্যা। তাঁর কথায়, বাড়িতে খুব স্বস্তিদায়ক পরিবেশে বড় হয়েছেন তিনি, তাঁর পরিবারে পিরিয়ড নিয়ে আলোচনা কোনো ট্যাবু নয়।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে একটি আলোচনাচক্রে যোগ দিয়েছিলেন অমিতাভ, দিয়া মির্জা, রাশমিকা মন্দনা ও নভ্য়া। সেখানে নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি নিয়েও বিশদ আলোচনা হয়। অভিনেত্রী রাশমিকা মন্দনা বলেন, বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েরা ট্যাবু বিষয়গুলো নিয়ে বাবা-মার সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করতে অস্বস্তিবোধ করে। নায়িকার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন অমিতাভ, যোগ করেন তাঁর মতে ঋতুস্রাব হলো ‘পুনর্র্নিমাণের চিহ্ন’।

দাদুর সঙ্গে সুর মিলিয়ে নভ্যা জানান, এটা জীবনের একটা চিহ্ন। এটা এমন কোনো বিষয় নয় যেটা নিয়ে মেয়েদের লজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছেন বা বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার দরকার রয়েছে। ঋতুস্রাব বিষয়টা দীর্ঘদিন ধরে একটা ট্যাবু বলে গণ্য হয়ে আসছে। কিন্তু সময় পাল্টাচ্ছে।

তিনি বলেন, আজ এই মঞ্চে আমি বসে রয়েছি আমার দাদুর সঙ্গে এবং পিরিয়ডস নিয়ে কথা বলছি, এটাই তো প্রগতির একটা চিহ্ন। আজ এই মুক্তমঞ্চে বসে রয়েছি আমরা, এত মানুষ আমাদের দেখছে, আর আমরা খোলাখুলি ঋতুস্রাব নিয়ে আলোচনা করছি―এটা প্রমাণ করে আমি অনেকটা পথ এগিয়ে গেছি, একজন নারী হিসেবে শুরু নয়, আমাদের দেশও প্রগতিশীল হয়েছে।

ঋতুস্রাব নিয়ে আলোচনা কোনো ট্যাবু নয়, এই ধারণা ভাঙতে শুধু মেয়েরা নয় ছেলেরাও এগিয়ে আসছে, মত নভ্যার। তিনি বলেন, আমি সৌভাগ্যবান যে আমি এমন বাড়িতে বড় হয়েছি যেখানে ঋতুস্রাব নিয়ে কথা বলাটা খুব সহজ ছিল।

নভ্যা মনে করেন, ঋতুচক্র এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলার পরিসর তৈরি করাটাই অগ্রগতির প্রথম পদক্ষেপ। আর তার জন্য প্রত্যেককে এই বিষয়ে খুব সহজে নিজের পরিবার, বন্ধু এবং সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

নভ্যা মনে করেন, ঋতুচক্র এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলার পরিসর তৈরি করাটাই অগ্রগতির প্রথম পদক্ষেপ। আর তার জন্য প্রত্যেককে এই বিষয়ে খুব সহজে নিজের পরিবার, বন্ধু এবং সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

তাঁর মতে, ঋতুস্রাব নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা অনেক দিন ধরেই নিষিদ্ধ ছিল এ দেশে। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে। এটা দেখে ভাল লাগছে যে কেবল মহিলারা নয়, পুরুষরাও এই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু যে কোনও পরিবর্তন বাড়ি থেকেই শুরু হয়, তাই মহিলারা যেন নিজের বাড়িতে নিজের শরীর নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সেটা মাথায় রাখতে হবে। তার পর না হয় বাড়ির বাইরে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলা যাবে।

এর আগেও গত মে মাসে, বিশ্ব ঋতুকালীন সুস্বাস্থ্য দিবসে অনেকে মিলে দেওয়ালে ম্যুরাল এঁকেছিলেন। সেই ভিডিও পোস্ট করে লিখেছিলেন, 'বিশ্ব ঋতুকালীন সুস্বাস্থ্য দিবস পালনের উদ্দেশ্যে ম্যুরাল আঁকলাম দেওয়ালে। পিরিয়ডের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং ঋতুকালীন দিনগুলোয় মহিলাদের চারপাশটা আরও অনুকূল করে তোলার আশায় এই উদ্যোগ।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top