সর্বকালের সেরা ১০ ভারতীয় সিনেমার প্রথম তিনটিই বাংলা!

ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথম দশটি সিনেমার তিনটিই বাংলা। শুধু তাই নয়, এই তিনটি ছবির পরিচালক বাংলা চলচ্চিত্রের ‘ত্রিমূর্তি’ হিসেবে পরিচিত সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক ও মৃণাল সেন।

সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিকসের (এফআইপিআরএসসিআই) ‘ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার’ একটি জরিপ করে। সেখানে সমালোচকদের মতামতের ভিত্তিতে সেরা ১০ চলচ্চিত্র নির্বাচিত করা হয়।

এর মধ্যে পাঁচটি হিন্দি, তিনটি বাংলা, একটি মালায়লাম ও একটি কন্নড় ভাষার সিনেমা। জনপ্রিয় ইন্ডাস্ট্রি তামিল ও তেলেগুর কোনও সিনেমা তালিকায় স্থান পায়নি।

জরিপে সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্রের স্বীকৃতি পায় বাংলা সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’। সত্যজিৎ রায় নির্মিত আইকনিক সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৫৫ সালে ছবিটি নির্মাণ করেন সত্যজিৎ রায়। এটিই এ কিংবদন্তি পরিচালকের প্রথম পরিচালিত সিনেমা।

১৯৫৫ সালের ৩ মে নিউইয়র্ক শহরের মিউজিয়াম অফ মডার্ণ আর্টের একটি প্রদর্শনীতে চলচ্চিত্রটি প্রথম মুক্তি পায়। এবং সেই বছরই কলকাতায়ও মুক্তি পায় এই সিনেমা। স্বাধীন ভারতে নির্মিত পথের পাঁচালী ছিল প্রথম চলচ্চিত্র যা আন্তর্জাতিক মনোযোগ টানতে সক্ষম হয়।

তালিকায় পরের ছবিটি ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’। ১৯৬০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি শক্তিপদ রাজগুরুর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। উদ্বাস্তু কলোনির এক মেয়ের সংগ্রাম নিয়ে তৈরি এই ছবিও বিশ্ব চলচ্চিত্রে এক স্বকীয় ভাষার অবতারণা করে। তালিকায় তৃতীয় চলচ্চিত্রটি মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ (১৯৬৯)। উৎপল দত্ত ও সুহাসিনী মূলে অভিনীত এ চলচ্চিত্র ভারতীয় চলচ্চিত্রের হয়ে বিশ্বজয় করার গল্প লেখে।

এই তিন বঙ্গসন্তানের সিনেমার পর তালিকার চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে আদুর গোপালকৃষ্ণণের মালয়ালাম ছবি ‘এলিপ্পাথায়াম’ (১৯৮১), গিরীশ কাসারাভাল্লির কন্নড় ছবি ‘ঘাটশ্রাদ্ধ’ (১৯৭৭) এবং এমএস সথ্যুর ‘গরম হাওয়া’ (১৯৭৩)। তবে ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চারুলতা’ দিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানেও আছে সত্যজিতের নাম।

তালিকার অষ্টমে রয়েছে শ্যাম বেনেগালের হিন্দি সিনেমা ‘অঙ্কুর’ (১৯৭৪), নবমে গুরু দত্তের ‘পিয়াসা’ (১৮৫৪) এবং দশমে রমেশ সিপ্পির সিনেমা ‘শোলে’ (১৯৭৫)।

এফআইপিআরএসসিআই নামের এ চলচ্চিত্র সমালোচকদের সংগঠনটি ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কান, ভেনিস বা ভিয়েনা ইত্যাদি চলচ্চিত্র উৎসবে এই সংগঠন বিভিন্ন ছবিকে পুরস্কৃত করে থাকে। জানা গিয়েছে, এই জরিপটি অত্যন্ত গোপনীয়তায় সম্পন্ন করে এফআইপিআরএসসিআই। জরিপে মতামত দিয়েছেন সংগঠনের ত্রিশ জন সদস্য।