ঘরে বসেই ‘ভ্রমণ’ করা যাবে মদিনার মসজিদে নববি

রাজিউর রেহমান | প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৬:২০

মদিনার মসজিদে নববি

সৌদি আরবের মদিনা নবীর শহর, একে আরবিতে বলা হয় ‘মদিনাতুন নবী’। আর মদিনার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘মসজিদে নববি’। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থানগুলোর মধ্যে মসজিদে নববি অন্যতম। নির্মাণ ও স্থাপত্যশৈলীর কারণেও বিখ্যাত মদিনার এই মসজিদ। পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের সময় মসজিদে নববিতে নামাজ পড়তে হয়। তবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে থাকা অনেকে ইচ্ছা সত্ত্বেও নিজের চোখে এই মসজিদ দেখার সুযোগ পাননি।

তো কি হয়েছে? একটা উপায়তো নিশ্চয়ই আছে। তবে তার আগে বলুন, ঘরে বসেই কি মদিনার পবিত্র মসজিদে নববির ভেতর-বাহির ঘুরে দেখতে চান? মহানবী (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারক খুব কাছ থেকে দেখে দরুদ-সালাম পেশ করতে চান? জান্নাতের এক টুকরো ভূমি হিসেবে পরিচিত পবিত্র রিয়াজুল জান্নাহ দেখে মন ভরাতে চান?

তাহলে আপনার জন্যই দারুণ এক আয়োজন করে রেখেছে সৌদি আরবের সরকারি সংস্থা ‘কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স’-এর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি টিম। স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে ব্রাউজ করেই উপভোগ করতে পারবেন মসজিদে নববির স্বর্গীয় সৌন্দর্য।

ভার্চ্যুয়ালি মসজিদে নববি দেখার সময় আজানসহ পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শোনা যাবে। মসজিদে নববি প্রাঙ্গণে থাকা উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে ত্রিমাত্রিক ছবি দেখা যাবে এবং দরকারি তথ্য পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে আরবির পাশাপাশি ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষাতেও তথ্যগুলো পড়তে পারবেন।

বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রবেশের পর মসজিদে নববিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের সামনের ও পাশের অংশ দেখতে পাবেন ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণকারীরা। মসজিদে নববির বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ রয়েছে। আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট ও কিং ফাহাদ গেট।

গেট নির্বাচন করে দিলে সেই পথে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে। পর্দার ওপরে মাঝখানে থাকা নির্দেশনাসূচক বাটন থেকে গেটগুলো নির্বাচন করতে হবে। ভার্চ্যুয়াল প্রযুক্তিতে আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট দিয়ে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে।

দেখা যাবে পাঠাগার, গ্যালারি ও প্রদর্শনী কক্ষ। নবীর তৈরি মসজিদের ওপরের অংশও দেখা যাবে। সবুজ মিনারের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি মসজিদে নববির মিনারও দেখা যাবে এই ভ্রমণে। ভার্চ্যুয়ালি মসজিদে নববি দেখার সময় কম্পিউটার বা মুঠোফোনের পর্দার আকার ছোট বা বড় করে দেখা যাবে। শুধু তা–ই নয়, পর্দার ডান পাশে থাকা বিভিন্ন অপশন কাজে লাগিয়ে ছবিগুলো টুইটার ও ফেসবুকে শেয়ার করা যাবে।

২০০১ সালে কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন সৌদি আরবের ইসলামবিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন আবদুল আজিজ আল-শায়েখ, নির্বাহী তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন শায়খ তালাল বিন রাজিন আল-রেহাইলি এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও ফটোগ্রাফার ছিলেন যথাক্রমে আলি ইবনে আবদুল্লাহ বর্নাভি ও হানি ইবনে জাকি আল-ফুল।

২০১০ সালে পবিত্র মসজিদের নববির ভেতর-বাহিরের অর্ধশত উচ্চমানের ছবি যুক্ত করে এই চমৎকার সাইটটি তৈরি করা হয়। ৩৬০ ডিগ্রিতে ছবিগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় শোনা যাবে মসজিদে নববির আজান, পবিত্র কোরআনের তেলাওয়াতও।

ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, মহানবী (সা.)-এর রওজা শরিফ, রিয়াজুল জান্নাহ, বাবুস সালাম, বাবে জিবরাইল, বাবুর রহমাহ, বাবে আবু বকর সিদ্দিক, বাবে ওমর ইবনুল খাত্তাব, সবুজ গম্বুজ, মসজিদে নববির ভেতরের দৃশ্য, মসজিদে নববির ছাদ, লাইব্রেরি, বাকি গোরস্থানসহ আশপাশের সবকিছুই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top