যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়ছে চীনা গোয়েন্দা বেলুন

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৩:৫০

চীনা গোয়েন্দা বেলুন

যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে চীনের 'গুপ্তচর বেলুন' উড়ে যেতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙকেনের বেইজিং সফরের কয়েকদিন আগে এমনটা দেখা গেলো। এ ঘটনায় ২ দেশের মাঝে দেখা দিয়েছে নতুন করে দ্বন্দ্ব। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন দাবি করেছে, এটি চীনের গোয়েন্দা নজরদারি বেলুন। বেলুনটির উপর নজর রাখা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এমনটা জানান মার্কিন কর্মকর্তারা। একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ করার পরপরই তার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়। এ সময় বেলুনটিকে চালকসংযুক্ত জঙ্গিবিমান দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেকেই আকাশে ধূসর রঙের ওই বেলুন ওড়ার ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। চাঁদের পাশাপাশি আরেকটি চাঁদের মতো দেখতে বিশাল বস্তুর উপস্থিতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে। কেউ আবার বেলুনটি ঘিরে মার্কিন জেট ফাইটার ওড়ার ভিডিও শেয়ার করেছেন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই চীনের এ ধরনের কার্যক্রম তারা লক্ষ্য করে আসছেন। আগের সরকারের সময়ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, বেলুনটি এখন বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচল সীমার ওপর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের জন্য শারীরিক ও সামরিক কোনো ঝুঁকি আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

মার্কিন কর্তকর্তারা বলছেন, বেলুনটি যে এলাকায় উড়ছে, সেখানে বিমানঘাঁটি ও কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি রয়েছে। তবে যে উচ্চতা দিয়ে সেটি উড়ছে, তাতে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে– তেমন সম্ভাবনা নেই। পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা গোয়েন্দা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বরং চীন এর চেয়ে ভালো তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম।

চলমান উত্তেজনার মধ্যে উভয় পক্ষের গোয়েন্দাবৃত্তির যে ইচ্ছা, তা এ ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। এ ঘটনায় জঙ্গিবিমান মোতায়েন করা হলেও বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত না করতে উপদেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টারা।

বেলুনের ধ্বংসাবশেষ নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে—এমন আশঙ্কায় এ উপদেশ দেওয়া হয়। বাইডেন এ উপদেশ গ্রাহ্য করেছেন বলেও জানান মার্কিন কর্মকর্তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে বেলুনটি যেসব এলাকার ওপর দিয়ে উড়ছিল, সেখানে বসবাসরত মানুষের ক্ষতি বিবেচনা করে তা আর করা হয়নি।

ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের চীন বিশেষজ্ঞ ক্রেগ সিঙ্গেলটন বলেছেন, এই ধরনের বেলুনগুলো স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছিল। এটি কম খরচে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের একটি পদ্ধতি ছিল।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এর স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি টুইট বার্তায় বলেন, 'মার্কিন সার্বভৌমত্বের প্রতি চীনের কাণ্ডজ্ঞানহীন অবজ্ঞা একটি অস্থিতিশীল উদ্যোগ এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন চুপ থাকতে পারেন না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top