সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বুরকিনা ফাসোতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৪৪

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৮:২৯

বুরকিনা ফাসোতে সন্ত্রাসী হামলা

বুরকিনা ফাসোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দেশটির উত্তর-পূর্বের আঞ্চলিক গভর্নর এই তথ্য জানান।

দেশটির উত্তর-পূর্ব কৌরাকাউ ও টোন্ডোবি গ্রামে চালানো এই ঘৃণ্য ও বর্বর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন সাহেল অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট গভর্নর রোডলফ সোর্গো। তিনি জানান, অস্ত্রধারীরা কৌরাকাউ গ্রামে ৩১ জনকে ও টোন্ডোবি গ্রামে ১৩ জনকে হত্যা করেছে। খবর ডয়চে ভেলের।

রোডলফ সোর্গো বলেন, বুরকিনা ফাসোর সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়ছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) উত্তর বুরকিনা ফাসোর নাইজার সীমান্তবর্তী সাহেল অঞ্চলের কৌরাকাউ এবং টন্ডোবি গ্রামে হামলা চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। হামলায় প্রায় ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

সাহেল অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট-গভর্নর রোডলফ সোর্গো জানান, বৃহস্পতিবারের হামলায় কৌরাকাউতে ৩১ জন এবং টন্ডোবি গ্রামে ১৩ নিহত হয়েছেন। এ হামালায় অন্যান্য গ্রামবাসীও আহত হয়েছেন। তবে তাদের সংখ্যা ঠিক জানা যায়নি।

তিনি আরও জানান, ‘হামলার শিকার এলাকাকে স্থিতিশীল করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্তে সেনা অভিযান চলছে।

কৌরাকাউয়ের একজন বাসিন্দা এএফপিকে বলেছেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিশাল সন্ত্রাসী দল গ্রামে ঢুকে পড়ে। তিনি আরও বলেন, আমরা সারারাত ধরে গুলির শব্দ শুনতে পাই। শুক্রবার সকালে দেখতে রাতের হামলায় পাই কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছে।

দ্য গার্ডিয়ান জানায়, দরিদ্র সাহেল অঞ্চলটি আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের জিহাদিদের সঙ্গে সাত বছর ধরে লড়াই করছে। সংকটের সময় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির উত্তরে ডিউত অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের হামলায় ৫১ সৈন্য নিহত হয়।

একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পল-হেনরি দামিবার নেতৃত্বে বুরকিনা ফাসোর সামরিক বাহিনী সহিংসতা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। কিন্তু তিনি এসব আক্রমণ ও সহিংসতা বন্ধ করতে ব্যর্থ হন এবং সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় আরেকটি অভ্যুত্থানে তাকে অপসারণ করেন ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে।

বুরকিনা ফাসোর নতুন সামরিক প্রধান এই সপ্তাহে জিহাদিদের বিরুদ্ধে একটি গতিশীল আক্রমণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

২০১৫ সাল থেকে সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলা মোকাবিলায় রীতিমতো সংগ্রাম করছে বুরকিনা ফাসো। সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা এবং আইএস’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া গত এক দশকে আফ্রিকার এই দেশটিতে সহিংসতা অনেক বেড়েছে এবং জোরালো হয়েছে। আর এতে প্রতি বছর হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।

এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বুরকিনা ফাসো, নাইজার এবং মালির বিস্তৃত এলাকাজুড়ে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সম্পর্কিত জিহাদিদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল থেকে কয়েক মিলিয়ন সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন। এসব হামলা ও সহিংসতায় নিহত হয়েছেন হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ। এছাড়া, সাহারার দক্ষিণে সাহেল অঞ্চলে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top