সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ১৩৩

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ২২:২৭

মিয়ানমারে বিমান হামলা

মিয়ানমারে সামরিক বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৩ জনে। নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ও অনেক শিশু রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাগাইং প্রদেশে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের এক অনুষ্ঠানের সময় এ হামলা চালানো হয়। সকালে পিডিএফ স্থানীয় অফিসের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো। এ সময় সেনাবাহিনী সেখানে বিমান হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে জঙ্গিবিমানগুলো কমিউনিটি হলে বোমা বর্ষণের মাধ্যমে এই হামলা চালায়। বোমা বর্ষণের কিছুক্ষণ পর তারা হেলিকপ্টার থেকে গুলিও চালায়। এতে ঘটনাস্থলে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক বাসিন্দার আপলোড করা ভিডিওতে দেখা গেছে, মাটিতে খণ্ডিত লাশ পড়ে আছে। বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন জ্বলছে। বাসিন্দারা চিৎকার করে বলছেন, ‘যদি কেউ বেঁচে থাকেন তাহলে সাড়া দেন, আমরা আপনাদের সাহায্য করার জন্য আসছি।’

হামলার পর জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, পাজিগ্যি গ্রামের একটি কমিউনিটি হলে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পিডিএফ। সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে যারা নিহত হয়েছে তাদের প্রায় সবাই ওই ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীর সদস্য। কেউ ইউনিফর্ম পরা, কেউ সাদা পোশাকে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই হামলার জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি মিয়ানমারের জনগণের ওপর সেনাবাহিনীর হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।

এরআগে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অংসান সুচি'র নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক জান্তা সরকার। তারপর থেকে দেশটিতে জান্তা বিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়েছে। ক্ষমতা দখলের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০০ বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা সরকার। এরপর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত তিন হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

মিয়ানমার উইটনেস বলছে, বিক্ষোভে বেসামরিক লোকজনের বিরুদ্ধে ইয়াকোভলেভ ইয়াক-১৩০ বিমান ব্যবহার করার বিষয়টি যাচাই করে দেখেছে তারা রক্তক্ষয়ী এ অবস্থাকে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ও অন্যরা গৃহযুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। এতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

সাগাইং অঞ্চলে পিডিএফ অত্যন্ত শক্তিশালী। মূলত তারাই সেখানে প্রশাসন পরিচালনা করে। তাই ওই অঞ্চলের প্রতি জান্তার বিশেষ ক্ষোভ রয়েছে। গত মাসে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসীদের’ কঠোর হাতে দমন করা হবে। তার ওই ঘোষণার পর সাগাইংয়ে এই ভয়াবহ বিমান হামলা চালানো হয়।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top