সুদানে সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০০
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ২০:৫৩
সুদানে তিনদিন ধরে ক্ষমতার জন্য সংঘর্ষ চলছে সেনাবাহিনী এবং আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)'র মধ্যে। দুপক্ষের লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৮০০ জন। খবর আল জাজিরার।
নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সাথে ভিডিওতে কথা বলার সময় জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ভলকার পার্থেস জানান, যুদ্ধরত দুই পক্ষের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে না তারা শান্তির জন্য মধ্যস্থতা চায়।
এদিকে সোমবার, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আবারও সুদানের যুদ্ধরত দুই পক্ষকে "অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করার" আহ্বান জানিয়েছেন। এই যুদ্ধ সুদানের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে বলে সতর্কবার্তা জানান তিনি। সোমবার সুদানে দুই বাহিনীর সংঘাতে নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে শর্ত ছাড়াই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
সুদানের রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে শনিবার লড়াই শুরু হয়। সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে শীর্ষ দুই জেনারেল এবং সবশেষ এই সংঘর্ষের জন্য তাদের নেতৃত্বাধীন দুই বাহিনী পরস্পরকে দায়ী করছে।
রাজধানী খার্তুমে সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর ও প্রেসিডেন্ট ভবন। প্রত্যক্ষদর্শীরা সিএনএনকে জানিয়েছেন, আজ ভোরে মর্টার ও কামানের গোলার শব্দ শোনা গেছে। ফজরের নামাজের পর হামলার তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। খার্তুম বিমানবন্দর ও সুদানের সেনাবাহিনীর ব্যারাকগুলোয় যুদ্ধবিমান হামলার তীব্রতা বেড়েছে বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
যাচাইকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার দিয়ে বিমানবন্দরে হামলা চালানো হচ্ছে। আরেকটি ক্লিপে সেনাবাহিনীর জেনারেল কমান্ড ভবনের ভস্মীভূত ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। এই ভবনটিতে গতকাল আগুনে জ্বলছিল।
রাজধানী থেকে শত শত মাইল দূরে পোর্ট সুদান ও পশ্চিম দারফুর অঞ্চলেও সংঘর্ষের সংবাদ পাওয়া গেছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত জাতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ আছে। সেখানকার কর্মীরা বলছেন, টেলিভিশন কেন্দ্রটি এখন আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
২০১৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে উৎখাতের পর ও ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানে ক্ষমতায় আসেন সেনা প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নেন আরএসএফের নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। তিনি হেমেতি নামে বেশি পরিচিত।
সম্প্রতি তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও মৈত্রীতে ফাটল ধরে। আলোচনার মাধ্যমে আরএসএফকে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করে দেশে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছিল। মূলত এ থেকেই ২ সামরিক নেতার মতভেদের শুরু।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা—সুদানের সামরিক বাহিনীর ২ সংস্থার মধ্যে চলমান সংঘর্ষে দেশটিতে বেসামরিক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে আসার আশা সুদূর পরাহত হয়েছে এবং আরও বড় আকারে সংঘাত ছড়িয়ে যেতে পারে।
বিষয়: সুদান সংঘাত নিহত সংঘর্ষ সেনাবাহিনী আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস আরএসএফ newsflash71
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।