শর্ত পূরণ না হলে শস্যচুক্তিতে ফিরবে না মস্কো
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২২:০৮
শস্যচুক্তির ক্ষেত্রে রাশিয়ার শর্ত মানা না হলে এই চুক্তিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই মস্কোর। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এই অবস্থানের কথা সাফ জানিয়ে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার কৃষ্ণসাগরী শহর সোচিতে বেঠকে বসেছিলেন দুই নেতা। আশা করা হচ্ছিল এই চুক্তি নিয়ে অচলাবস্থা কাটবে। চুক্তি বাতিলের কারণে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বেশ কিছু দেশ বিপাকে পড়েছে।
চলতি বছর জুলাইয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা আর নবায়ন করেনি রাশিয়া। তাদের অভিযোগ শস্য দরিদ্র দেশগুলোতে যাচ্ছে না এবং এর সাপেক্ষে দেওয়া শর্তগুলোও পূরণ করা হচ্ছে না।
সোমবার বৈঠকে আবারো সেই কথা মনে করিয়ে দেন পুতিন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কৃষ্ণ সাগরের এই রুট সামরিক কাজে ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি তার শর্ত মানা হয় তবে আবার এই চুক্তিতে ফিরতে পারে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
অন্যদিকে এরদোয়ান আশা করছেন খুব শিগগিরই কেনো পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, তুরস্ক ও জাতিসংঘ এই অচলাবস্থা কাটাতে নতুন কিছু প্রস্তাব পরিকল্পনা করেছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই প্রকল্প চলমান থাকা উচিত। শিগগিরই একটি অগ্রগতি আসতে পারে বলেও আশা করেন এরদোয়ান।
গেলো বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে কৃষ্ণসাগরের জাহাজ চলাচল পথ ও বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় মস্কো। এতে করে ইউক্রেনের উৎপাদিত শস্য বন্দরে আটকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি স্বাভাবিক করতে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছরের ২২ জুলাই রাশিয়া–ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। যা কার্যকর হয় গত বছরের আগস্ট মাসের শুরু থেকে।
গত জুলাই মাসে কৃষি রপ্তানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার শর্ত উপেক্ষা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে শস্যচুক্তি থেকে বের হয়ে যায় রাশিয়া। দেশটির অভিযোগ, রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা রক্ষা করা হয়নি।
নতুন করে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী রুশ শহর সোচিতে বৈঠকে বসেন পুতিন-এরদোয়ান। আশা ছিল, বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা চুক্তিটিকে পুনরুজ্জীবিত হবে। তবে, বৈঠকের পরেই পুতিনের থেকে এই বক্তব্য এলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তিটি নতুন করে না করা হলে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর। কারণ, ওইসব দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনের শস্যের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
তবে, আফ্রিকার দেশগুলোর সমস্যা লাঘবের কথা জানান পুতিন। সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, চলতি সপ্তাহেই আফ্রিকার ছয় দেশে বিনামূল্যে শস্য পাঠাবো আমরা। রাশিয়ার এই শীর্ষ নেতা অভিযোগ করে বলেন, কৃষ্ণ সাগর চুক্তির মাধ্যমে রপ্তানি করা শস্যের একটি বড় অংশ দরিদ্র দেশগুলোর পরিবর্তে পশ্চিমে চলে গেছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।