একই দণ্ড বুশরা বিবিরও
ইমরান খানের আরও ১৪ বছরের কারাদণ্ড
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০২৪, ১৬:৩৪
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের আইনি সমস্যা বেড়েই চলেছে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন পাকিস্তানের আদালত। খবর বিবিসি। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এই রায় ঘোষণা করে ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালত (অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট)। এ সময় স্ত্রী বুশরা বিবি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। খবর ডন।
এর আগে, মঙ্গলবার অপর একটি আদালতে পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান এবং তার দলের নেতা শাহ মাহমুদ কুরেরিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সরকারি নথি গায়েব তথা তথ্যপাচারের অভিযোগে, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইনে এই দণ্ড দেয় পাকিস্তানের বিশেষ একটি আদালত। ডনের খবর।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে এদের কারোরই অংশ নেওয়ার সুযোগ রইলো না। ২০২২ এর মার্চে সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার অনাস্থায় ক্ষমতা ছাড়তে হয় ইমরানকে।
বলা হয়ে থাকে, পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর আনুকূল্য পেয়েই খুব তড়তড়িয়ে সাফল্য পেয়েছিল ইমরানের প্রতিষ্ঠিত ও নেতৃত্বাধীন দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তার সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থান ক্ষুব্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রকে। একই কারণে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দুরত্ব হয় দলের। তার খেসারত আজও দিয়ে চলেছেন ইমরান।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক দমনপীড়নের মুখে পড়েছে পিটিআই। বিরোধী যে দলগুলোকে জনপ্রিয়তায় টপকে পিটিআই ক্ষমতায় এসেছিল, সেগুলোই এখন সরকারে। আর তাদের পেছনে রয়েছে সেনাসমর্থন।
পিটিআইয়ের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। তাদের অনেক প্রার্থীরই প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে যাতে তারা নির্বাচনে যেতে না পারে। সংবাদমাধ্যমকে বলে দেওয়া হয়েছে ইমরান ও তার দলের কোনো প্রচার না করতে। এর মধ্যেই পাকিস্তানের ওই বিশেষ আদালতের বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন ৩৪২ ধারার অধীনে সর্বশেষ এই রায় দিলেন।
শাহ মাহমুদ কুরেশির জন্য এটি প্রথম দণ্ড। তারও নির্বাচন করার কথা ছিল। এখন তা আর তিনি পারবেন না। রাষ্ট্রীয় যে নথিটি হারানোর অভিযোগে এ দুজনের শাস্তি দেওয়া হলো সেটাতে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইমরানকে উৎখাতের যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ছিল বলে আলোচনা রয়েছে।
সেটি গায়েবের কথা বরাবরই নাকচ করে আসছে পিটিআই। ইমরান আদালতকে তার দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, সেটা কোথায় আছে তিনি জানেন না।
আর রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বেরিয়ে যেতে থাকা বিচারকের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে কুরেশী বলছিলেন, আদালত তার কথাই শোনেনি। পিটিআই নিন্দা জানিয়েছে এই রায়ের। প্রহসনের বিচার বলছে তারা।
দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ইমরান ও কুরেশির সঙ্গে আছে। কেননা তারা দুজন মানুষের মুক্তির জন্য লড়ছেন। আরও বলা হয়, ২০২২-২৩ এ ইমরান সরকারের সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে এই বিচারের মাধ্যমে চাপা দেওয়া সম্ভব হবে না।
বিবৃতির ভাষ্য অনুযায়ী, সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর নির্দেশে পিটিআইকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছিল। একই বিবৃতিতে ৮ই ফেব্রুয়ারিতে বের হয়ে ইমরানের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়েছে পিটিআই।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইনশাল্লাহ কাপ্তান (ইমরান খান) ও ভাইস কাপ্তান দ্রুতই ফিরে আসবেন আপনাদের মাঝে। আপীলে এই রায় আস্তাকুড়ে ফেলে দেওয়া হবে।
গতকাল অন্য মামলায় ইমরান খানের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একদিন পর তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আরও ১৪ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হলো। এছাড়া বর্তমানে দুর্নীতির মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশের ভিত্তিতে জেল খাটছেন ইমরান খান।
বিষয়: ইমরান খান ১৪ বছরের কারাদণ্ড বুশরা বিবি পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফ তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) পিটিআই
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।