শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কমলার সঙ্গে আর বিতর্ক করতে চান না ট্রাম্প

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:০৭

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ৫ নভেম্বর। এর আগে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে আর বিতর্কে অংশ নিবেন না রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তিনি এমনটি জানিয়েছেন।

ওই পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘তৃতীয় কোনো বিতর্ক হবে না!’ ট্রাম্পের পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ আগেই এক র‍্যালিতে অংশ নিয়ে কমলা জানিয়েছেন, তিনি আরেকটি বিতর্কে অংশ নিতে চান। আর ভোটারদের কাছে তিনি এই বিতর্কের জন্য দায়বদ্ধ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে অংশ নেন ট্রাম্প। বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হওয়ার পর নানা ঘটনার প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন বাইডেন। তবে সবশেষ বিতর্কে ট্রাম্প কমলার কাছ ধরাশায়ী হয়েছেন বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

গত মঙ্গলবার বিতর্ক মঞ্চে প্রবেশ করেই ট্রাম্পের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দেন কমলা। দুজনের করমর্দন শেষে কমলার বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এদিন উভয় নেতা গাজা যুদ্ধ, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, মূল্যস্ফীতি, অভিবাসন নীতি ও গর্ভপাতসহ নানা বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। তবে কমলার সামনে পাত্তাই পাননি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শেষমেশ একপর্যায়ে কমলাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

বিতর্কের প্রথম প্রশ্নই ছিল অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে। এই ইস্যুতে কমলা বলেন, তিনি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তাই, তিনি তাদের কষ্ট বোঝেন। এ জন্য মধ্যবিত্তদের জন্য কর কর্তনের পরিকল্পনার কথা জানান কমলা। আর ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে ধনীদের কর কর্তন করা হবে বলে উল্লেখ করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটির ইতিহাসের সেরা অর্থনীতি বানিয়েছিলেন। আর মূল্যস্ফীতির জন্য বাইডেন প্রশাসনকেই দায়ী করেন তিনি।

ক্ষমতায় যেতে দুই নেতাই ইসরায়েলকে তোষণ করেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, কমলা ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন। তিনি আরব জনগণকেও ঘৃণা করেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প। গাজা যুদ্ধ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকলে এ যুদ্ধ হতোই না। এই যুদ্ধের সমাপ্তি হওয়া উচিত উল্লেখ করে কমলা বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে এটি কীভাবে করছে তা গুরুত্বপূর্ণ।

বিতর্কে বাইডেনকে অস্তিত্বহীন প্রেসিডেন্ট বলে কমলার তোপের মুখে পড়েন ট্রাম্প। ওই মন্তব্যের জের ধরে কমলা বলেন, নির্বাচনে আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়ছেন না, আপনি লড়ছেন আমার বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত প্রসঙ্গে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলেন, আপনি এখন আর প্রেসিডেন্ট নেই- এতে আমাদের ন্যাটো মিত্ররা খুবই কৃতজ্ঞ। পুতিন ট্রাম্পকে সহজেই কবজা করে ফেলতেন বলেও উল্লেখ করেন কমলা।

ট্রাম্প-কমলার এবারের বিতর্কের আয়োজন করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ফিলাডেলফিয়ার ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ৯০ মিনিটের এ বিতর্ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ডেভিড মুইর ও লিনসে ডেভিস। বিতর্কটি ১৭টি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়।

মার্কিন গবেষণা সংস্থা নিয়েলসেনের তথ্য অনুযায়ী, এ বিতর্কটি ১৭টি টেলিভিশন নেটওয়ার্কে দেখেছে ৬ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন মঙ্গলবারের নির্বাচনে কমলা পেয়েছেন। আর ২৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন এই বিতর্কে ট্রাম্পের জয় হয়েছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top