ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৫ শিশুসহ নিহত আরও ৪৯

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪:৫৪

গাজায় ৫ শিশুসহ নিহত আরও ৪৯

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন শিশুও রয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ভোর থেকে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত আরও ৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হাজার ৮৮৫ জনে পৌঁছেছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসের কাছে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দাবি করেছেন এবং হুঁশিয়ারী দিয়ে জানিয়েছেন, এ দাবি পূরণ না হলে ‘কঠোর প্রতিশোধ’ শুরু হবে।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য লেবাননের সেনাবাহিনীকে দক্ষিণ অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানকে অনেকেই ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করছেন। এই হামলাগুলোর কারণে মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে, বিশেষ করে ত্রাণবাহী গাড়িগুলোর ওপর হামলা ও জ্বালানি ট্যাঙ্ক লুটের কারণে।

এদিকে ত্রাণবাহী গাড়ির ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ এবং জ্বালানি ট্যাংকসহ সহায়তাবাহী গাড়িতে ফিলিস্তিনি গ্যাংদের পদ্ধতিগত লুটপাটের কারণে মানবিক সংকট দিন দিন গভীরতর হচ্ছে। এই অপরাধী গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে এক ধরনের সুরক্ষা পাচ্ছে।

এছাড়া গাজার ইউরোপীয় হাসপাতাল সতর্ক করে বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মজুদে থাকা জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে এবং আল-আকসা হাসপাতালও বলেছে, জ্বালানির ঘাটতির কারণে তাদেরকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতে হবে।

এদিকে সর্বশেষ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হাজার ৮৮৫ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ১৯৬ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

গাজায় চলমান সহিংসতা মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমঝোতার মাধ্যমে এই সংঘাত বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top