বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

চূড়ান্ত হচ্ছে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩০

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার শেষপ্রান্তে পৌঁছেছে হামাস-ইসরায়েল। সপ্তাহব্যাপী কাতারের দোহায় চলমান আলোচনায় যেকোনো সময় আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিবিসি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।

আলোচনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, দোহায় আলোচনা বেশ ‘সম্ভাবনা’ দেখাচ্ছে। (যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রসঙ্গে) উভয়পক্ষের মধ্যে দূরত্ব কমানো গেছে, সবকিছু ঠিকভাবে এগোলে এটি একটি চুক্তিতে রূপ নিতে পারবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি এমন সময় সামনে এল, যখন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ‘চলতি সপ্তাহে’ একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তিসংক্রান্ত চুক্তি হতে পারে।

ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। কয়েক ঘণ্টা, দিন বা এর বেশি সময়ের মধ্যে চুক্তি হওয়া সম্ভব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত রোববার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ছাড়া গতকাল সোমবার তিনি কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গেও আলাপ করেছেন, যিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছেন।

জ্যাক সুলিভান বলেন, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও আলাপ করার কথা রয়েছে জো বাইডেনের।

এদিকে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন জোটের ভেতর থেকে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে। নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টির কয়েকজনসহ জোটের ১০ জন ডানপন্থী সদস্য যুদ্ধবিরতির বিরোধিতার করে তাঁর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

অন্যদিকে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি সফল হলে সেটি তিন ধাপে বিভক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। প্রথম ভাগে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করছে তেল আবিব।

দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে চুক্তি কার্যকরের ১৬তম দিনে। এ সময় জোর দেওয়া হবে সব নাগরিক এবং বন্দি সেনাদের মুক্তির বিষয়ে। তৃতীয় এবং শেষ ধাপে থাকবে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির পরবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি।

অবশ্য, যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় এখনও বর্বর হামলা-অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে দখলদার বাহিনীর সবশেষ হামলায় আরও ১৯ ফিলিস্তনির প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হয়ে অন্তত ৪৬ হাজার ৫৮৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন গত ১৫ মাসে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে হামাস উৎখাতের নামে গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলা-অভিযানে এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ৭৩১ লোক, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ২০ লাখ বাসিন্দা।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলা-অভিযানের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে আছে গাজার প্রতিটি বাসিন্দা।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top