তুরস্কে স্কি রিসোর্টের হোটেলে আগুন, নিহত ৬৬
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ২১:০৪
তুরস্কের মধ্যাঞ্চলীয় বোলু প্রদেশের একটি স্কি রিসোর্টের হোটেলে আগুন লেগে অন্তত ৬৬ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫১ জন। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) দিনগত রাতে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত গ্র্যান্ড কার্তাল নামের হোটেলটিতে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কামাল মেমিসোগলু জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৬৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা গেছে। আরও ৫১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া-ও।
মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুসারে, অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলটিতে ২৩৮ জন অতিথি নিবন্ধিত ছিল, যা দুই সপ্তাহের স্কুল ছুটির সময় সর্বোচ্চ বলে বিবেচিত।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির খবরে বলা হয়েছে, হোটেলের বাইরের দিকের কাঠের আস্তরণের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ১৬১ কক্ষ বিশিষ্ট হোটেলটি একটি পাহাড়ের ধারে অবস্থিত হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকলকর্মীদের বেগ পেতে হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ১২তলা হোটেলটির রেস্তোরাঁর মেঝেতে প্রথম আগুনের সুত্রপাত হয়। সেখান থেকে দ্রুত আগুন ভবনটির বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে হোটেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
অনেক অতিথিই বারান্দার রেলিং থেকে বিছানার চাদর ও রশি বেঁধে উপরের তলা থেকে নিচে নামার চেষ্টা করেন। বহু মানুষ জানালা দিয়ে লাফও দেন। বোলুর গভর্নর আব্দুল আজিজ আইদিন জানিয়েছেন, এই ভাবে আগুন থেকে বাঁচতে গিয়ে অন্তত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, হোটেলটির ছাদ এবং উপরের তলায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ছাদ থেকে গাঢ় ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি ঘরের জানালা দিয়ে ভিতরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। হোটেলের লবিও পুড়ে কালো হয়ে গেছে। সেখানে প্রচুর ভাঙা কাঁচ এবং পোড়া আসবাবপত্র পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
একটি ভিডিয়োতে দেখা গেছে, দমকলকর্মীরা হোটেলের জানালা দিয়ে ভিতরে আটকে থাকা লোকজনদের উদ্ধার করছেন। রাস্তায় বেশ কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক গাড়িও ছিল।
তবে অতিথিদের একাংশের অভিযোগ, দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতে অনেক দেরি করেছেন। তাঁদের দাবি, খবর দেওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পরে সেখানে এসে উপস্থিত হয় দমকলের প্রথম ইঞ্জিনটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হোটেলের ভিতরের অংশ ধোঁয়ায় ভরা। তাঁরা শ্বাস নিতে পারছিলেন না। হোটেলের অগ্নি সনাক্তকরণ ব্যবস্থাও কাজ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার সময় হোটেলের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন আতাকান ইয়েলকোভান। তিনি সংবাদ সংস্থা আইএইচএকে বলেন, 'আমার স্ত্রী কিছু পোড়ার গন্ধ পেয়েছিলেন। ওই সময় কোনো অ্যালার্ম বাজেনি।'
তিনি আরও বলেন, "ওপরের তলাগুলোর লোকেরা চিৎকার করছিল। তারা জানালা দিয়ে বিছানার চাদর ঝুলিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেন...কেউ কেউ লাফ দেওয়ার চেষ্টা করেন।"
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।