ফ্রান্স-নেপালজুড়ে বিক্ষোভ-অস্থিরতা, গ্রেপ্তার-সহিংসতায় উত্তাল রাজপথ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:২৩

ফ্রান্স ও নেপালে টানা বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজপথ। কোথাও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, কোথাও আবার অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় অস্থির হয়ে পড়েছে দুই দেশই।
ফ্রান্সে ‘ব্লোকঁ তু’ আন্দোলন
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সে হাজারো তরুণ “ব্লোকঁ তু” (সবকিছু অচল) কর্মসূচি পালন করলে রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে অচল হয়ে পড়ে স্বাভাবিক জীবন। সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ, প্রতিবন্ধকতা তৈরির ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৮০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুই শতাধিককে আটক করা হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনে-তে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যকে বিদ্রোহী মানসিকতা বলে আখ্যা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, অনলাইনে সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধীরা এই অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে এবং কিছু বামপন্থি রাজনীতিবিদ তাদের মদদ দিচ্ছেন।
সংবাদমাধ্যম লো মঁদ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর ব্যয় সংকোচন নীতি ও বাজেট বৈষম্যের বিরোধিতা করেই মূলত এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগের দিনই আস্থা ভোটে হেরে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া বায়রু। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেবাস্টিয়ান লোকনুকে নিয়োগ দেওয়ার পরদিনই শুরু হলো এই বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, মাখোঁ সংসদ ভেঙে না দিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠজনকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন, যা হতাশাজনক।
নেপালে টানা সহিংসতা ও পদত্যাগের হিড়িক
অন্যদিকে, নেপালে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরও রাজপথ শান্ত হয়নি। কেপি শর্মা ওলি সরে দাঁড়ানোর আগে থেকেই বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবন, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ও মন্ত্রীদের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেন। পদত্যাগের পরও তা অব্যাহত রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল জনগণকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে উত্তেজনা কমেনি।
টানা বিক্ষোভে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেলও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ, দুর্নীতির প্রতিবাদে আন্দোলন এবং সহিংসতায় অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার পরই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফ্রান্স ও নেপালের চলমান এই রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল অভ্যন্তরীণ নয়, বরং দুই দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ধারা ও অর্থনৈতিক নীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।