অবরুদ্ধ গাজায় সমুদ্রের আশীর্বাদ

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৪৩

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপকূলে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হলো অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিরা। মানবিক ত্রাণবাহী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটকাতে ব্যস্ত ছিল ইসরায়েলি নৌবাহিনী। সেই সুযোগে দীর্ঘ সময় পর গভীর সমুদ্রে জাল ফেলেন স্থানীয় জেলেরা। অবশেষে তাদের জালে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ।

এই মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েক ডজন জেলে সমুদ্রসৈকতে জাল টেনে তুলছেন এবং উপস্থিত জনতা উল্লাস করছে। দুঃসহ জীবনে এটি ছিল গাজাবাসীর জন্য এক টুকরো স্বস্তি ও আনন্দের মুহূর্ত।

গত বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে ইসরায়েলি বাহিনী ৪০টিরও বেশি দেশের ৪৫০ জনেরও বেশি ত্রাণকর্মীকে বহনকারী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটক করে। এই জাহাজবহর অবরোধ ভেঙে গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফ্লোটিলা অভিযানে ব্যস্ত থাকায় ইসরায়েলি টহল সেদিন অন্যদিকে মনোযোগ দেয়। ফলে কয়েক মাস পর প্রথমবারের মতো জেলেরা গুলি বা আটকের ভয় ছাড়াই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে পেরেছেন।

ভিডিওটি দ্রুত অনলাইনে ভাইরাল হয়। অনেকে এটিকে ফিলিস্তিনিদের সহনশীলতা ও টিকে থাকার প্রতীক হিসেবে দেখছেন। কেউ একে সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ বলেছেন, আবার কেউ গাজার মানুষকে স্বাধীনভাবে মাছ ধরতে না দেওয়ার নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

উল্লেখ্য, অসলো চুক্তি অনুযায়ী, গাজার জেলেদের ২০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মাছ ধরার অনুমতি থাকার কথা। কিন্তু ইসরায়েলি বিধিনিষেধে তা সীমিত করে মাত্র ৬ নটিক্যাল মাইলে রাখা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে প্রায়ই গুলি, নৌকা বাজেয়াপ্ত কিংবা আটক হওয়ার ঘটনা ঘটে।

গাজার কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান সংঘাতের কারণে মৎস্য খাত কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ৪,৬০০ টন মাছ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, যার বাজারমূল্য ২০ মিলিয়ন ডলারের বেশি। চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ৪,০০০ জেলে। প্রোটিনের প্রধান উৎস মাছ এখন সেখানে দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে, যা ভয়াবহ খাদ্য সংকটকে আরও তীব্র করছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top