ভারী বৃষ্টিপাত দার্জিলিংয়ে ১৭ জনের মৃত্যু, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক | দার্জিলিং | প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৮

ভূমিধসের কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছবি: এনডি টিভি

উত্তরবঙ্গে টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের কারণে দার্জিলিংয়ে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। ভূমিধসের কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ফলে পুরো উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

রাতভর অবিরাম বৃষ্টিতে দার্জিলিং-এর মিরিক ও সুখিয়া পোখরিতে একাধিক স্থানে বড় ধরনের ভূমিধস হয়েছে। এতে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দার্জিলিং জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সেলফি দারা, রবিঝোরা ও তিস্তা বাজারের কাছে এনইচস টেন সড়ক একাধিক স্থানে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কালিম্পং–দার্জিলিং ও শিলিগুড়ির মধ্যে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। করোনেশন ব্রিজের দিক থেকেও সিকিম ও দার্জিলিং পাহাড়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পুলিশ যাত্রীদের লাভা-গোরুবাথান রুট ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে বিকল্প পথে চলাচলের জন্য।

ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) ৫ অক্টোবর ভোরে সিকিমের ছয়টি জেলায় দুটি লাল সতর্কতা জারি করে। বজ্রপাত, ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। পরে সকাল নাগাদ সতর্কতাটি কমলা সতর্কতায় নামিয়ে আনা হয়।

আইএমডির পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃষ্টিপাত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) নিরাপত্তার স্বার্থে দার্জিলিং-এর জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র টাইগার হিল ও রক গার্ডেন সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি দার্জিলিং-এর বিখ্যাত টয় ট্রেন সার্ভিসও স্থগিত রাখা হয়েছে।

বাসিন্দা ও পর্যটকদের জরুরি প্রয়োজনে বাইরে না বেরিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চলমান থাকায় সড়ক ও আবহাওয়ার আপডেট সম্পর্কে অবগত থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন—

“দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়ংয়ের পাহাড়ি অঞ্চলগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ভূমিধস ও বন্যার কারণে শিলিগুড়ি, তরাই ও ডুয়ার্সের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন।”

তিনি মুখ্য সচিবকে অবিলম্বে সম্পদ মোতায়েন এবং ত্রাণ ও যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও কোচবিহারেও ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত।

 

সুত্র: এনডি টিভি



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top