শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২

দীপাবলিতে ৬৪ শিশুর চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঘটনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৩৩

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে এবারের দীপাবলি উদযাপনের সময় ‘দিওয়ালি খেলনা’ নামে পরিচিত হাতে বানানো কার্বাইড বন্দুক ব্যবহার করে পটকা ফাটানোর কারণে কমপক্ষে ৬৪ শিশু-কিশোর চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবছরের মতো এবারের দীপাবলিতেও শিশু-কিশোরদের মধ্যে পটকা ফাটানো ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু এই কার্বাইড বন্দুক, যা ঘরে তৈরি বা হাতে বানানো হয় এবং পটকা উৎক্ষেপণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়, শিশুদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে।

‘দিওয়ালি খেলনা’ বা কার্বাইড বন্দুক হলো নলাকৃতির একটি লাঞ্চার, যেখানে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানি ব্যবহার করে পটকা তৈরি করা যায়। লিভারে চাপ দিলে পটকা উৎক্ষেপিত হয় এবং প্রচণ্ড শব্দ হয়। তবে অনেক সময় কিছু সেকেন্ড বিলম্বের পরই বিস্ফোরণ ঘটে। এই সময়ে কেউ যদি নলের কাছে চোখ রাখে, হঠাৎ বিস্ফোরণে চোখের কর্নিয়া, আইরিস এবং রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনিবার্য অন্ধত্ব বরণ করতে পারে।

দামে এই ‘খেলনা’ মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০৯ থেকে ২৭৮ টাকা), যা শিশুদের কাছে কিফায়তসুলভ হলেও বিপজ্জনক প্রাণঘাতী অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত।

মধ্যপ্রদেশের ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালে চোখে গুরুতর আঘাত নিয়ে ভর্তি হয়েছে ১৭ বছরের নেহা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-কে সে জানিয়েছে, “দীপাবলীর দিনে আমরা কার্বাইড বন্দুক দিয়ে পটকা ফাটাচ্ছিলাম, হঠাৎ আমার এক চোখে আঘাত লাগে। এখন ওই চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।”

ভোপাল মেমোরিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চক্ষুবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডা. হেমলতা যাদব বলেন, “কার্বাইড বন্দুক শুধু পটকা ছোড়ার যন্ত্র নয়, এটি আসলে এক প্রকার রাসায়নিক বোমা।”

মধ্যপ্রদেশসহ ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে কার্বাইড বন্দুক তৈরি ও বিক্রি নিষিদ্ধ। তবে এবারের দীপাবলিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই বন্দুক বেশ স্বচ্ছন্দে বিক্রি হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশে তিন দিনে শতাধিক শিশু-পড়ুয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে কমপক্ষে ১৪ জন চিরতরে দৃষ্টি হারিয়েছে। বিহারের রাজধানী পাটনাতেও কমপক্ষে ৫০ শিশু স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন, সামনের দিনগুলোতে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top