বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

গাজায় কোনো শান্ত রাত নেই: শার্ম আল-শেখ শান্তির হাসিতে গুম হলো গাজার বেদনাপীড়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৯

ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক শান্তি আলোচনা ও মধ্যস্থতাকারী সাংবাদিক লাবনা মাসারোওয়ারার মিডল ইস্ট আই‑তে প্রকাশিত নিবন্ধ অনুযায়ী, শার্ম আল‑শেখে বিশ্ব নেতাদের হাসি‑ঠাট্টা ও করমর্দন চলাকালীন গাজায় বোমাবর্ষণ শিথিল হয়নি — বরং থেমে থেমে যে আক্রমণ হতো, তা সাধারণ অহরহেই চালিয়ে যাচ্ছিল।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির পরের এক দিনেই ইসরায়েলি অভিযানে ১০৪‑এর বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন; তাদের মধ্যে ৪৬ জন শিশু এবং একই পরিবারের ১৮ সদস্য রয়েছেন। অনেক নিহতের নামও জানা যায়নি — তারা নীরবে, বেনামে শহীদ হয়েছেন।

লেখায় বর্ণিত হয়েছে কিভাবে গাজার মৃতদেহ, ক্ষুধার কষ্ট এবং ত্রাণবঞ্চনার ছবি আন্তর্জাতিক জনমনে ঠিকঠাক জায়গা পাচ্ছে না — ফিলিস্তিনিরা যেন গল্পহীন, অতীতহীন ও ভবিষ্যৎহীন হয়ে পড়েছে। ফুলচোখে ক্যামেরার সামনে ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের আবেগ দেখানো হলেও গাজার শহীদ শিশুর জন্য চোখের জল ফেলছে না কোনো বড় শক্তি।

নিবন্ধে কয়েকটি মানবিক ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে — এক ফিলিস্তিনি বন্দির মেয়ে রাজান জানিয়েছেন, মুক্তি পাওয়ার দিনও সেনারা তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে হতাশ ও হুমকির মুখে ফেলে। গাজার এক মুক্ত প্রাপ্ত ব্যক্তি, হাইসাম সালেম, তার পরিবারের একযোগে নিহতের ব্যথা প্রকাশ করে কাঁদেন — নিজের মেয়ের জন্য বানানো একটি ব্রেসলেট দেখিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা তার জন্য তৈরি করেছিলাম, নিজের হাতে।’

শার্ম আল‑শেখ ঘোষণাপত্রে অংশ নেওয়া সরকারগুলো ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার জন্য আলাপচর্চার কথাই বললেও, ইসরায়েল চুক্তি মানবে না বলে নিবন্ধে উল্লেখ আছে। লেখক দেখেছেন একটি নতুন 'যুদ্ধোত্তর' মডেল রূপ নিচ্ছে — যেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তর্জন‑ফুঁক নেই, আর ‘প্রতিরক্ষার অধিকার’ ‘জানার অধিকার’কে প্রতিস্থাপিত করছে — ফলে ইচ্ছেমত আক্রমণের পথ খোলা রয়ে যাচ্ছে।

যুদ্ধবিরতি থাকলেও ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে; অবরোধ শিথিল করার ঘোষণার পরও ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় মারা যাচ্ছে অসহায় নারী ও শিশু। নিবন্ধটি উল্লেখ করে যে শুধু সংখ্যা নয় — ২০,০০০ শিশুসহ ৬৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির জীবনকে আন্তর্জাতিকভাবে যথেষ্টভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top