ভারতে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়ালো

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:

করোনা মহামারিতে ভারতে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। শনিবার (৩ অক্টোবর) বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৮৪২ জনে পৌঁছেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃতের দেশে পরিণত হয়েছে ভারত। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়ে অন্তত কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হিসেবে ভারত এখনও বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে। ৬৪ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আক্রান্ত শনাক্তের মধ্য দিয়ে দেশটি এখন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে প্রথম অবস্থানে চলে যাওয়ার পথে রয়েছে। তবে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যায় ইতোমধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভারত।

১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় চার গুণ বেশি। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃতের সংখ্যা ভারতের প্রায় দ্বিগুণ। ফলে ভারতে মৃতের সরকারি হিসেব নিয়ে সন্দেহ জোরালো হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে সরকারি হিসেবের চেয়ে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় ভাইরোলোজিস্ট টি জ্যাকব জন বলেন, ভারতের বিশ্বাসযোগ্য মৃত্যু হার আমরা জানি না। যথাসময়ে সব রোগের ঘটনাক্রম ও মৃত্যু নথিবদ্ধ করার জন্য ভারতে জনস্বাস্থ্য নজরদারি ব্যবস্থা নেই।

ভারতে প্রতিদিন দশ লাখ মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হলেও জনসংখ্যার তুলনায় দেশটির পরীক্ষার হার পৃথিবীর অনেক দেশের থেকেই কম।

আর সেকারণেই ভারতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসেবের অনেক বেশি বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে চালানো বেশ কিছু জরিপেও একই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ একটি মহামারি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ভারতের অন্তত ছয় কোটি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। যা সরকারি হিসেবের চেয়ে দশ গুণ বেশি।

আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও অর্থনীতি উন্মুক্ত করে দেওয়া থেকে বিরত থাকছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত মার্চে দেশটিতে কঠোর লকডাউন আরোপ করে ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকানো যায়নি শুধু না, বরং হঠাৎ করে কাজ হারিয়ে দুর্ভোগে পড়ে লাখ লাখ মানুষ।

সর্বশেষ তিন মাসে ভারতের অর্থনীতি প্রায় ২৪ শতাংশ পতন ঘটেছে। মহামারির আগে থেকে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির বেহাল দশা কাটিয়ে উঠতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই সচল করে দেওয়া হচ্ছে।