আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা সরাচ্ছে ন্যাটো-যুক্তরাষ্ট্র
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক | প্রকাশিত: ২ মে ২০২১, ২২:০৩
আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এর মাধ্যমে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো। প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের সেনা মোতায়েন ছিল। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কাজ চলবে।
তবে এমন এক সময়ে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো যখন দেশটিতে নতুন করে সংঘর্ষ বাড়তে শুরু করেছে। ২০২০ সালের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তালেবানদের এক চুক্তি অনুযায়ী, এ বছর মে মাসের ১ তারিখের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
চুক্তি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সেনাদের ওপর হামলা বন্ধ রাখতে হবে তালেবান বাহিনীকে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে এই সময়সীমা পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মতে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ পর্যন্ত আফগানিস্তানে সেনা উপস্থিতি থাকা প্রয়োজন। এ বছর নাইন ইলেভেন হামলার ২০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে।
মূলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নিরাপত্তা হুমকির কথা মাথায় রেখে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করার তারিখ বর্ধিত করা হয়েছে। এই সময়ে আফগানিস্তানের অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হামলা থেকে পশ্চিমা সেনাদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে তালেবান। যদিও আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর তালেবানদের হামলা বন্ধ হয়নি।
সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সময় কোন ধরনের আক্রমণের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন জেনারেল স্কট মিলার। তিনি বলেছেন, ‘ভুলে যাবেন না, যে কোন ধরনের আক্রমণের জবাব দেবার, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণে তাদের সহায়তায় সামরিক সক্ষমতা জোটের রয়েছে।’
অন্যদিকে চুক্তি সত্বেও তারিখ পিছিয়ে দেয়া সম্পর্কে তালেবানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চুক্তির লঙ্ঘন দখলদার বাহিনীর (পশ্চিমা সেনা) উপর তালেবান যোদ্ধাদের যেকোনো ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেবার নীতিগত সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’
তবে কোন ধরনের আক্রমণে যাওয়ার আগে তালেবান যোদ্ধারা তাদের নেতাদের নির্দেশের অপেক্ষা করবে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমা বড় ধরনের হামলা এড়ানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
কাবুলে একটি বেসরকারি রেডিওতে কর্মরত মিনা নওরোজি বলছেন, ‘অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে আমরা আবারো তালেবানদের সেই কালো অধ্যায়ে ফিরে যাব।’
তার মতে, তালেবানরা যেমন ছিল তেমনই আছে। তারা বদলে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল এখানে তাদের উপস্থিতি আরও এক দুই বছর বাড়ানো।’ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও যেহেতু আফগান সরকার ও তালেবানের শান্তি আলোচনা স্থগিত হয়ে রয়েছে তাই সংঘাত যে চলতে থাকবে তা অনিবার্য সেই আশংকা থেকেই যাচ্ছে।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: আফগানিস্তান
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।