পার্বতীপুরে অচল ডেমু ট্রেন সচল করে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু

দেশীয় প্রকৌশলীরা নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে অচল ডেমু ট্রেন সচল করে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু করেছে। আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় ট্রেনটি পরীক্ষামূলক ভাবে দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

জানা যায়, রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় ট্রেনটি সচল করতে পার্বতীপুর ডিজেল ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করা হয়। প্রায় তিন বছর অচল থাকার পর কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৭২ কর্মদিবসের নিরলস পরিশ্রমে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। চীনের মাধ্যমে এসব প্রতিটি ডেমু সচল করতে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ের কথা থাকলেও মাত্র ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশেই তা ঠিক করা হয়েছে।

জানা গেছে, স্বল্প দূরত্বে যাত্রী পরিবহনের লক্ষে ২০১৩ সালে সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ সেট ডেমু ট্রেন চীন থেকে আমদানি করা হয় । কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ওই ট্রেনগুলো এক ধরনের বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। কিন্তু এর আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান চীনের তানশাং ইন্টারন্যাশনাল ও ডানিয়াল টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ডেমু ট্রেনের এসব প্রযুক্তি বাংলাদেশকে হস্তান্তর করেনি। ফলে সময় বাড়ার সাথে সাথে এসব ডেমু ট্রেন একের পর এক ট্রেন বিকল হতে শুরু করে। এসব সমস্যা সমাধানে চীনের প্রকৌশলীদের দ্বারস্ত হওয়ার প্রয়োজন হতো। এতে মোটা অংকের টাকাও গুনতে হয় রেলকে।

পার্বতীপুরের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা‘র) প্রধান নির্বাহী রফিকুল ইসলাম জানান, দেশের প্রকৌশলীরা চীনের লুকিয়ে রাখা কঠিন প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ সহজ পদ্ধতিতে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিজেল ওয়ার্কশপে সচলের কাজ করা হয়। সেখানে ৭২ কর্মদিবসে এসব ডেমু ট্রেন সচলের জন্য উপযোগী করে তোলেন কর্মকর্তারা। তারই অংশ হিসেবে আজ ট্রাইলে যাচ্ছে ডেমু ট্রেনটি। সবকিছু ঠিক থাকলে সহজ পদ্ধতিতে বাকি অচল ডেমু ট্রেন গুলোকে সচল করা হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

এদিকে ডেমু ট্রেন চালুর সংবাদে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্বল্প দূরত্বে যাত্রীরা। দিনাজপুরের আইনজীবি শাহাজাহান আলী বলেন, এ ট্রেনটি চালু হলে আমাদের জন্য আরো সুবিধা হবে। এটি বন্ধ থাকায় দিনাজপুর যাতায়াতে খুব কষ্ট হতো। দেশীয় প্রকৌশলীরা দেশের জন্য আরও কাজ করবে এমত প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।