শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর
সুজন হাসান | প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:১৫
সোমবার (২৩ অক্টোবর) গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেছে স্থানীয় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।
শিল্প পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকার পূর্বানী গ্রুপের করিম টেক্সটাইলের শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ করে। শ্রমিকেরা তাদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে বিক্ষোভ করে। পরে তাদের সঙ্গে আশপাশের লগোজ অ্যাপারেলস, হাইড্রো অক্সাইড সোয়েটার কারখানা, এপিএস অ্যাপারেলস ও বে-ফুটওয়ার কারখানার শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
এক পর্যায়ে শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উভয় দিতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন মহাসড়কেরে চলাচলকারীরা।
শ্রমিকরা জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকার পূর্বানী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল কারখানার আমরা সর্বনিম্ন মূল বেতন (বেসিক) ১৫ হাজার টাকা করার দাবিতে সকাল ৯টার দিকে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করি। এক পর্যায়ে আমরা কারখানা থেকে রাস্তায় বের হয়ে আসি। এ সময়ে আশপাশের লগোজ অ্যাপারেলস, হাইড্রো অক্সাইড সোয়েটার কারখানা, এপিএস অ্যাপারেলস, বে-ফুটওয়ার কারখানার শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বে-ফুটওয়ার কারখানায় দরজা জানালার কাচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করেন।
শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন পথে চলাচলকারীরা। পুলিশ অবরোধকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে। শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। দু’পক্ষের মাঝে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে পুলিশসহ অন্তত ১০/১২ জন আহত হয়। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকেরা তাদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার করার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। তার পরেও শ্রমিকেরা দীর্ঘ সময় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় এবং পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা বাধ্য হয়ে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করি এবং শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিই। পরে বেলা আড়াইটার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।