ফরিদপুরে কাফনের কাপড় পরে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ

সুজন হাসান | প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৪, ১৩:৫৩

ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ী থেকে ঢাকাগামী চন্দনা কমিউটার ট্রেনের ফরিদপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির দাবিতে আবারও অবরোধ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার ভোর ৫টায় ফরিদপুর রেলস্টেশনে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচি করা হয়। এ সময় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রাবিরতি দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

রাজবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে আসা চন্দনা কমিউটার ট্রেন ভোর সাড়ে ৫টায় ফরিদপুর এসে পৌঁছলে ট্রেনটির গতিরোধ করে স্থানীয়রা। ফরিদপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে কাফনের কাপড় পরে রেললাইনে শুয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা।

বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রায় ৪০ মিনিট ট্রেনটি ফরিদপুর স্টেশনে অবস্থান করে। পরে ট্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবস্থানকারীরা সরে গেলে ৬টা ১০ মিনিটের দিকে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।

এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করে। এই সময়ের মধ্যে ট্রেনের স্টপেজ না দেওয়া হলে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানান তারা।

এর আগে একই দাবিতে গত ৫ মে ট্রেন চালুর দিনও স্টপেজের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-ঢাকা পথে বাণিজ্যিকভাবে নতুন করে এক জোড়া কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এর আগে, ৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেনটির উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম এমপি। তবে ফরিদপুর রেলস্টেশনে কোন যাত্রাবিরতি না থাকায় এ নিয়ে ফরিদপুরের রেলযাত্রীদের মাঝে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবরার নাদিম ইতু বলেন, বর্তমান সরকারের সাফল্যের আরেকটি নতুন অধ্যায় শুরু হলো রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার সাথে নতুন দুটি কমিউটার ট্রেন চালু। তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, ফরিদপুরের উপর দিয়ে গেলেও ফরিদপুর রেলস্টেশনে কোনো স্টপেজ রাখা হয়নি। এতে ফরিদপুরের যাত্রীরা সুলভে ঢাকার সাথে যাতায়াতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলো। চাকরিজীবীরাও যাতায়াতে বঞ্চিত হবে। এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে অনতিবিলম্বে ফরিদপুর রেলস্টেশনে এই চন্দনা কমিউটার ট্রেনের স্টপেজের দাবি জানাই।

আরেক বাসিন্দা শরিফ খান বলেন, এই রুটে অন্যান্য ট্রেনের ফরিদপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি রয়েছে। কিন্তু চন্দনা কমিউটার ট্রেনের কোনো যাত্রাবিরতি রাখা হয়নি। একমাত্র এই ট্রেনটিতেই চাকরিজীবীরা সকালে ফরিদপুর থেকে ঢাকায় গিয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসতে পারবে। দুঃখের বিষয় হলো এই ট্রেনটির যাত্রাবিরতি ফরিদপুরে নেই। দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাই ফরিদপুর স্টেশনে ট্রেনটির স্টপেজের।

মূলত একটি ট্রেন দুটি ইঞ্জিন দিয়ে পরিচালিত হবে দুটি রুটে দুটি নামে। রাজবাড়ী থেকে ট্রেনটি এসে ভাঙ্গায় যাত্রাবিরতি নেবে। সেখানে ইঞ্জিন বদলে আবার ঢাকা যাবে। এর মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ১২১ ও ১২৪ নম্বর ট্রেনটির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘ভাঙ্গা এক্সপ্রেস’। আর ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে ১২২ ও ১২৩ নম্বর ট্রেনের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘চন্দনা এক্সপ্রেস’। তবে ফরিদপুরে এই ট্রেনের কোনো স্টপেজ নেই। একই রেলপথ দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস, সুন্দরবন, রাজশাহী ও নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস চলাচল করে। চারটি ট্রেনেরই ফরিদপুরে যাত্রাবিরতি রয়েছে। কিন্তু চন্দনা কমিউটার ট্রেনের যাত্রাবিরতি ফরিদপুর রেলস্টেশনে না থাকায় এই বিক্ষোভ করে ফরিদপুরের সর্বস্তরের জনগণ।

চন্দনা কমিউটার ট্রেনের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুতই স্থানীয়দের দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top